বিজয় দিবসের আয়োজন উপলক্ষে জোর করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ

বিজয় দিবসের আয়োজন উপলক্ষে জোর করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ
দুই আয়োজনেই থানার ওসিকে বিশেষ অতিথি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে প্রধান অতিথি করে আমন্ত্রণপত্র ছাপিয়ে চাঁদা তুলেছেন তারা। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের পূর্ব রসূলপুরে দুটি পৃথক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। দুই আয়োজনেই থানার ওসিকে বিশেষ অতিথি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে প্রধান অতিথি করে আমন্ত্রণপত্র ছাপিয়ে চাঁদা তুলেছেন তারা।

তবে ওসি বলছেন, তাকে অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি করার বিষয়টি তিনি জানেন না।

গত ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর সরেজমিনে কামরাঙ্গীচরের পূর্ব রসুলপুর এলাকার ৮ ও ৯ নম্বর রোডে গিয়ে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য এলাকার সব দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ি ঘুরে ঘুরে চাঁদা তুলেছেন আওয়ামী লীগ কর্মীরা।

অনেকে স্বেচ্ছায় চাঁদা দিলেও কয়েকজনের কাছ থেকে জোরজবরদস্তি করে চাঁদা আদায় করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ অভিযোগের বিষয়ে ব্যবসায়ী, দোকান মালিক, বাড়ির মালিকসহ ৮ জনের সঙ্গে কথা হয় ডেইলি স্টারের।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার এক বাসিন্দা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমন্ত্রণপত্র দেখিয়ে বাসা, দোকান, মার্কেট থেকে কয়েকদিন ধরে চাঁদা তোলা হচ্ছে। একেক বাড়ি ও দোকান থেকে বিভিন্ন অংকের চাঁদা দাবি করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে খরচের কথা বলে ৫০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা উঠানো হয়েছে।'

'চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা জোরজবরদস্তি করেছেন। আমার কাছে ১ হাজার টাকা চাঁদা চাওয়া হয়েছে। আমি বলেছি, ৫০০ টাকার বেশি দিতে পারবো না। কিন্তু তারা জোর করে ১ হাজার টাকা নিয়ে গেছে,' অভিযোগ করেন তিনি।

এলাকার আরেক ব্যবসায়ী বলেন, 'আমার কাছে তারা ৫ হাজার টাকা চেয়েছিল। আমি ৩ হাজার টাকা দিয়েছি। তারা বলে গেছে পরে এসে আরও ২ হাজার টাকা নিয়ে যাবে।'

তাদের অভিযোগ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তার চেয়ে কয়েকগুণ টাকা জবরদস্তি করে তোলা হয়েছে।

দুই অনুষ্ঠানের একটির সভাপতি ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. সিরাজ তালুকদার। আরেক অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জাবেদুল ইসলাম। অভিযোগের বিষয়ে জানতে তাদের দুজনের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তারা কেউ রিসিভ ধরেননি।

দুই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'দুটি অনুষ্ঠানের বিষয়ে আমি জানিনা। সিরাজ তালুকদার যে অনুষ্ঠানটির সঙ্গে আছেন, ৮ নম্বর রোডের সেই অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আমাকে জানানো হয়েছে।'

চাঁদা তোলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এখানে সবার সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে অনুষ্ঠান হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও এখানে এক-দেড় হাজার লোককে খিচুড়ি খাওয়ানো হবে। তাই খরচের বিষয় আছে। আমি নিজেও একটি বড় অংকের টাকা দিয়েছি। এলাকাবাসী স্বেচ্ছায়ই টাকা দিয়েছে। কাউকে চাঁদার ব্যাপারে কোনো জোর জবরদস্তি তারা করেনি।'

এদিকে দুই অনুষ্ঠানেরই বিশেষ অতিথি কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজ রহমান এই আয়োজন সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাকে যে প্রধান অতিথি করা হয়েছে সেটা আমি জানি না। আমাকে না জানিয়ে কেন কার্ড ছাপানো হলো এ ব্যাপারে আমি খোঁজ নিচ্ছি। কাউকে জোর জবরদস্তি করে চাঁদা নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

DU JCD leader stabbed to death on campus

Shahriar Alam Shammo, 25, was the literature and publication secretary of the Sir AF Rahman Hall unit of Jatiyatabadi Chhatra Dal

3h ago