মেট্রোরেলে নিয়ম ভাঙার শাস্তি

নির্মাণ শুরুর আগেই মেট্রোরেল পরিচালনার সার্বিক বিষয়গুলোকে সুশৃঙ্খল করতে ২০১৫ সাল পাস হয় মেট্রোরেল আইন।
মেট্রোরেলের উদ্বোধনী যাত্রা। ছবি: শেখ এনামুল হক/স্টার

রাজধানীর যানজট নিরসনে ২০১৬ সালের ২৬ জুন উত্তরায় নির্মাণযজ্ঞ শুরু হয়েছিল মেট্রোরেলের। সাড়ে ৬ বছরে দেশের প্রথম এই বৈদ্যুতিক রেলের একাংশের কাজ শেষে আজ বুধবার প্রথম যাত্রী হয়ে এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হবে বাণিজ্যিক যাত্রী পরিবহন।

নির্মাণ শুরুর আগেই মেট্রোরেল পরিচালনার সার্বিক বিষয়গুলোকে সুশৃঙ্খল করতে ২০১৫ সাল পাস হয় মেট্রোরেল আইন। এই আইনে বিনা টিকিটে ভ্রমণসহ কোন অপরাধে কী শাস্তি হবে, সেগুলোর বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া আছে।

মেট্রোরেল আইনে উল্লেখ করা এসব অপরাধ ও সে অনুসারে নির্ধারিত শাস্তিগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো-

  • কোন ব্যক্তি যদি অননুমোদিতভাবে মেট্রোরেলের সংরক্ষিত জায়গায় প্রবেশ করেন কিংবা প্রবেশের পর জায়গাটি ত্যাগ করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা তার অধীনস্থ ব্যক্তির অনুরোধের পরও সেখানে অবস্থান করেন, তাহলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ জন্য তিনি অনধিক ১ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
  • কোন ব্যক্তি যদি মেট্রোরেল ও এর যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় বা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এমন কোনো কাজ করেন তাহলে তিনি অনধিক ৫ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
  • কোন ব্যক্তি যদি অননুমোদিতভাবে মেট্রোরেলের টিকিট বা পাস বিক্রি করেন অথবা তা বিকৃত বা জাল করেন, তাহলে তিনি অনধিক ১০ বছরের কারাদণ্ড বা ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
  • কোন ব্যক্তি যদি পরিদর্শককে তার দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন, অথবা মিথ্যা কিংবা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করেন তাহলে তিনি অনধিক ২ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
  • কোন ব্যক্তি যদি টিকিট বা বৈধ পাস ছাড়া অনুমোদিত দূরত্বের বেশি মেট্রোরেলে ভ্রমণ করেন, বা ভাড়া এড়ানোর জন্য অন্য কোনো কৌশল অবলম্বন করেন, তাহলে তাকে যাতায়াতের ভাড়ার ১০ গুণ পর্যন্ত অর্থদণ্ড দিতে হবে এবং তা অনাদায়ে তিনি অনধিক ৬ মাস কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
  • লাইসেন্সধারীর কোন কর্মচারী যদি মেট্রোরেল ও এর যন্ত্রপাতি এমনভাবে ব্যবহার করেন, যাতে মেট্রোরেল বা এর কোনো যাত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় বা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং তার দায়িত্ব পালনকালে এমনভাবে মেট্রোরেল ও এর যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেন যার ক্ষমতা লাইসেন্সধারী তাকে দেননি, তাহলে ওই কর্মচারী অনধিক ১ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

ক্ষতিপূরণের বিধান

আইনে মেট্রোরেলে চড়া প্রত্যেক যাত্রীর বীমার বিধান রাখা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মেট্রোরেল ও এতে যাতায়াতকারী সব যাত্রীর জন্য পরিচালনাকারী কোম্পানিকে বীমা সুবিধা দিতে হবে।

কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে ক্ষতিপূরণের দাবি উত্থাপনের ৯০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের অর্থ আদায় করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা তার পরিবারকে দেবে।

মেট্রোরেল দুর্ঘটনার কারণে ট্রেন বা যাত্রী ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তি বা স্থাপনা ও সম্পদের ক্ষতি হলে, সেজন্যও ক্ষতিপূরণ আদায় করে দেবে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী কোম্পানি।

আবার কোন লাইসেন্সধারী যদি মেট্রোরেল ও এর যাত্রীর এবং তৃতীয় পক্ষের বীমা না করেন তাহলে তিনি অনধিক ১০ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।





Comments