হরিজনদের রেস্টুরেন্টে বসতে বাধা, তদন্তের নির্দেশ মানবাধিকার কমিশনের
রেস্টুরেন্টে বসতে বাধা থাকায় খাবার কিনে রাস্তায় বসে খাচ্ছেন হরিজন সম্প্রদায়ের একটি পরিবার। বাবা-মায়ের সঙ্গে দুই শিশুকে দেখা যাচ্ছে ছবিতে। তারাও খাবার খাচ্ছে মাটিতে বসে। বৈষম্যের এই ছবিটি লালমনিরহাট শহরের মিশন মোড় এলাকার।
ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক আব্দুল আলিম। ছবির সঙ্গে তিনি লিখেছেন, 'এখন ও কৌলাসদের (স্টোরপাড়া, লালমনিরহাট) রেস্টুরেন্টের বাইরে বসে খেতে হয়। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।'
বিষয়টি এখন তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি)। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানিয়েছে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ ঘটনাটি তদন্ত করে আগামী জানুয়ারির মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন দিতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন।
কমিশন বলেছে, বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান। ২৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষ ভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না।
কমিশন আরও বলেছে, বর্ণিত অভিযোগের বিষয়টি মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহর কাছে জানতে চাইলে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, তিনি এখনো জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আদেশ পাননি। আদেশের পেলে তিনি তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেবেন।
লালমনিরহাট স্টোরপাড়া হরিজন কলোনির কৈলাস বাঁশফোরের ছেলে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমিত বাঁশফোর (১৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, বুধবার সকালে সে শহরের স্টেশন রোডে একটি রেস্টুরেন্টে নাস্তার খাওয়ার জন্য ঢুকেছিল। কিন্তু রেস্টুরেন্ট থেকে তাকে বের করে দেওয়া হয়। সুমিত এ ঘটনায় প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করতে উদ্যত হন রেস্টুরেন্টের মালিক ও কর্মচারীরা।
বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদের লালমনিরহাট জেলা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক ঘুগলু বাবু বাঁশফোর ডেইলি স্টারকে বলেন, জেলায় হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। তারা চরম বৈষম্যের শিকার। তাদের সন্তানরা শিক্ষিত হলেও বৈষম্যের বাধা পার হতে পারছে না।
Comments