পুরোনো পোশাকই তাদের ভরসা

পুরনো পোশাকই তাদের ভরসা
ছবিটি গতকাল রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে তুলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের আলোকচিত্রী প্রবীর দাশ।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের একটি ভবনে নাইটগার্ড হিসেবে কাজ করেন জহিরুল ইসলাম। তীব্র শীত থেকে রক্ষা পেতে তার একমাত্র ভরসা ছিল বেশ কয়েক বছর আগে কেনা একটি সোয়েটার। গতকাল তাকে কারওয়ান বাজারে রাস্তার পাশের একটি ভ্যান থেকে জ্যাকেট কিনতে দেখা যায়।

দ্য ডেইলি স্টারকে জহিরুল বলেন, 'শীতের পোশাক কিনতে আমি দোকানে গিয়েছিলাম। কিন্তু, সেখানে যে দাম, তা আমার নাগালের বাইরে। তাই আমি রাস্তার পাশের এই ভ্যান থেকে একটি জ্যাকেট কিনতে এসেছি।'

চলতি বছরের শুরু থেকে বাড়তে শুরু করেছে শীতের তীব্রতা। ফলে বাড়ছে শীতের পোশাকের বিক্রিও। তা কিনতে নিম্ন আয়ের মানুষেরা ভিড় জমাচ্ছেন রাস্তার ধারের বিক্রেতাদের কাছে।

রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্থান ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার পাশের ভ্যানগুলোতে আছে জ্যাকেট, সোয়েটার, কোট, মোজা, ট্রাউজার ও কার্ডিগানসহ শীতের বিভিন্ন পোশাক।

গত ৩ দিন ধরে কারওয়ান বাজারের রাস্তার ধারের দোকানগুলো ক্রেতাতে প্রায় ঠাসা ছিল। সোনারগাঁও হোটেলের ঠিক উল্টো পাশে অবস্থিত বেশ কয়েকজন বিক্রেতাকে গতকাল শীতের কাপড় বিক্রির জন্য নানাভাবে হাঁক দিতে দেখা যায়।

তাদের একজন বলছিলেন, 'যেইটা নেন ৩০ টাকা, বাইছা নেন ৩০ টাকা, একদাম ৩০ টাকা।'

সেখানকার বিক্রেতা আমিনুল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা পুরান ঢাকার বেগম বাজার থেকে ১০ টাকা দরে এই পুরনো পোশাকগুলো কিনে আনি। এগুলো পুরোনো পোশাক এবং এক-আধটু ছেঁড়া থাকে। কখন বেশি শীত পড়বে, আমরা সেই অপেক্ষাতেই থাকি। কারণ ঠান্ডা বেশি পড়লে আমরা এগুলো বিক্রি করতে পারি।'

সেখানে দেখা হয় ২ সন্তানের মা কুলসুম বেগমের সঙ্গে। ছেলে ও মেয়ের জন্য তিনি শীতের পোশাক কিনতে এসেছেন তিনি।

ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'আমি যদি শীতের একটি নতুন জামা কিনি, তাহলে দাম পড়বে অন্তত ৩৫০ টাকা। কিন্তু, আমার তো সেই সামর্থ্য নেই। তাই আমার ছেলে-মেয়ের জন্য শীতের কাপড় কিনতে এখানে এসেছি।'

তবে, ছেলে-মেয়ের জন্য শীতের পোশাক পছন্দ না হওয়ায় তিনি চলে যান।

ফার্মগেটের বিক্রেতা মোক্তার হোসেন শীতের পুরোনো পোশাক ১৫০ টাকা দরে বিক্রি করছিলেন।

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, '২ সপ্তাহ আগেও আমরা শীতের পুরোনো পোশাক ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে কিনতাম, যেগুলো পুরনো হলেও ছেঁড়া নেই। শীত বেশি পড়ায় এখন সেগুলো বেড়ে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।'

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় দেখা গেছে, রোগীদের স্বজনরা আশপাশে থাকা ভ্যান থেকে শীতের পোশাক কিনছেন।

তাদেরই একজন কুমিল্লার বাসিন্দা সালাউদ্দিন। 'পরিবারের সদস্যকে নিয়ে কুমিল্লা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছি। এখন যে অসহনীয় ঠান্ডা পড়ছে, তাই সোয়েটার কিনছি', বলেন তিনি।

কারওয়ান বাজার ও ফার্মগেট এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষের সঙ্গেও কথা বলেন ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক। তারা জানান, এই শীতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা সমাজের বিত্তবানদের কাছ থেকে তারা এখনো কোনো ধরনের শীতের পোশাক পাননি।

Comments

The Daily Star  | English

Central bank at odds with BPO over Nagad’s future

The discord became apparent after Faiz Ahmed Taiyeb, special assistant to the chief adviser with authority over the Ministry of Posts, Telecommunications and IT, sent a letter to the BB governor on May 12 and posted the letter to his Facebook account recently

4h ago