র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করবে বাংলাদেশ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ফাইল ছবি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, এলিট ফোর্স র‌্যাবের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করতে এবং দেশে ইতিবাচক ভূমিকা বিবেচনা করে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করবে বাংলাদেশ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে এক আলোচনায় অংশ নেয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'র‌্যাব এখন অনেক বেশি পরিপক্ক। আমাদের কাছে অনুরোধ থাকবে যে তারা (মার্কিন) সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে।'

ব্যুরো অব সাউথ অ্যান্ড সেন্ট্রাল এশিয়ান অ্যাফেয়ার্সের সহকারী সেক্রেটারি অব স্টেট হিসেবে ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর নিয়োগপ্রাপ্ত ডোনাল্ড লু তার ভারত সফর শেষ করে ১৪ জানুয়ারি বাংলাদেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

মোমেন বলেন, 'আমরা আমাদের বিষয়গুলো তুলে ধরব। তারা তাদের ইস্যু তুলবে। কিন্তু অন্যদের আমাদের গণতন্ত্র শেখানোর দরকার নেই। গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচার আমাদের প্রত্যেকের হৃদয়ে প্রোথিত।'

ডোনাল্ড লু জ্বালানি, বাণিজ্য, নিরাপত্তা সহযোগিতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, শ্রম এবং মানবাধিকারসহ বিভিন্ন অগ্রাধিকার নিয়ে বৈঠক করবেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, তিনি তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার, অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ এবং শ্রম ও মানবাধিকারের বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি শুনতে আলোচনা করতে বাংলাদেশি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সুশীল সমাজের নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন।

শুক্রবার মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র একই মূল্যবোধে বিশ্বাসী এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে উৎসাহিত করে।

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে ৩০ লাখ প্রাণ বিসর্জন দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, আমাদের নীতি ও মূল্যবোধ প্রায় একই।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশ তার ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের অংশ হোক। মোমেন বলেন যে বাংলাদেশ জনগণের স্বার্থের জন্য যা যা প্রয়োজন তা করতে প্রস্তুত রয়েছে। সরকার এখনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে অধ্যয়ন করছে।

শুক্রবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'এটা এতটা স্বচ্ছ নয়। এটা কীভাবে সুফল বয়ে আনবে সেটা সেখানে উল্লেখ করা হয়নি। আমরা এটা নিয়ে গবেষণা করছি।'

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, তিনি সহকারী সচিব লু'র সফরকে দুই পক্ষের মধ্যে নিয়মিত ব্যস্ততার অংশ হিসেবে দেখছেন।

তিনি বলেন, এমন অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে বাংলাদেশের কিছু প্রত্যাশা রয়েছে এবং মার্কিন পক্ষের বাংলাদেশ থেকে কিছু প্রত্যাশা থাকতে পারে। 'আমরা খোলাখুলি আলোচনা করব।'

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কৌশল রয়েছে।

মাসুদ বলেন, 'এটা নয় যে আমরা কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীতে যোগ দিচ্ছি বা না। আমরা বঙ্গোপসাগর এবং এর বাইরে কীভাবে দেখতে চাই তার কিছু উপাদান প্রস্তুত করছি।'

তার সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের সময়, দক্ষিণ এশিয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনিয়র ডিরেক্টর, ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল ইলিন লাউবাচার বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের একটি বড় অংশ হিসেবে বঙ্গোপসাগরে অত্যাবশ্যক শিপিং লেন এবং সমুদ্রের তলদেশে তারগুলো রয়েছে যা খাদ্য স্থানান্তর করে অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে, জ্বালানি, পণ্য এবং ডেটা।

তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ এবং এই অঞ্চলের সব দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এই লেনগুলো মুক্ত ও উন্মুক্ত থাকা নিশ্চিত করা জরুরি।

Comments

The Daily Star  | English

Trump says not yet made decision on whether to attack Iran

Israel army says struck Iran centrifuge production, weapons manufacturing sites

1d ago