তুমব্রু ক্যাম্পের ২৮৮৯ রোহিঙ্গাকে কুতুপালং নেওয়া হবে: আরআরআরসি

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমে তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখার ক্যাম্প থেকে বের হয়ে যাওয়া ২ হাজার ৮৮৯ রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে ট্রানজিট ক্যাম্পে নেওয়া হবে।
তুমব্রু
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় তুমব্রু সীমান্তের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গত ১৮ জানুয়ারি আগুন লাগে। ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমে তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখার ক্যাম্প থেকে বের হয়ে যাওয়া ২ হাজার ৮৮৯ রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে ট্রানজিট ক্যাম্পে নেওয়া হবে।

আজ মঙ্গলবার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তুমব্রু সীমান্তে চলতি মাসে সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ ও শূন্যরেখার ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের পর রোহিঙ্গারা তুমব্রুতে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে আশ্রয় নেয়। 

এ বিষয়ে গঠিত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটি ওই ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের কুতুপালং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান আরআরআরসি।

টাস্কফোর্স কমিটি সংশ্লিষ্টরা জানান, সম্প্রতি তুমব্রু সীমান্তে সংঘর্ষ পরিস্থিতিতে ক্যাম্পের পাশে বাজারে ও স্কুল প্রাঙ্গণে ২ হাজার ৮৮৯ জন রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়। 

তাদের কুতুপালং নিয়ে যেতে ইতোমধ্যে ওই তালিকা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। 

তুমব্রু সীমান্তে গত ১৮ জানুয়ারি সকাল থেকে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে গোলাগুলিতে এক রোহিঙ্গা নিহত এবং শিশুসহ দুইজন আহত হন। সেদিন বিকেলে ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ড হয়। এতে পুড়ে যায় ক্যাম্পের অধিকাংশ ঘর।

এ ঘটনার পর ওই ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের একটি অংশ মিয়ানমারে চলে যায়। অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশের ভেতরে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাজারসহ আশপাশের এলাকায় আশ্রয় নেয়।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট কমিটির সহায়তায় তুমব্রুতে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা নির্ধারণে জরিপ কাজ শেষ করেছে। জরিপে দেখা যায় তুমব্রুতে ৫৩৭টি পরিবারের ২ হাজার ৮৮৯ জন বাংলাদেশ ভূখণ্ডে আশ্রয় নিয়েছে।'

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, 'সীমান্ত পরিস্থিতিতে শূন্যরেখার ক্যাম্প থেকে বের হয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে একটি জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটি গঠিত হয়। এতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা আছেন।'

কমিটি ইতোমধ্যে ওই ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের অন্যত্র নিয়ে যাতে কাজ শুরু করেছে। তালিকায় থাকা রোহিঙ্গাদের মধ্যে কেউ উখিয়া বা টেকনাফের কোনো ক্যাম্পের নিবন্ধিত কি না, তা যাচাই-বাছাই চলছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, 'যাচাই-বাছাই শেষে নিবন্ধনহীন রোহিঙ্গাদের আপাতত উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হবে। যাদের বিরুদ্ধে অপরাধে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যাবে, তাদের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হবে।'

জানতে চাইলে নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত দিলে, রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে। সময়ক্ষেপণ করা হবে না। পরিবেশ রক্ষা এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা এখন আমাদের অগ্রাধিকার।'

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গারা দেশটি থেকে বাংলাদেশে আসতে থাকে। এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

তাদেরসহ অন্তত ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি অস্থায়ী ক্যাম্পে আশ্রয় দেওয়া হয়।

এছাড়া, তুমব্রু সীমান্তে কোনারপাড়া শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬৩০ পরিবারের ৪ হাজার ৪০০ রোহিঙ্গা বসবাস করছিল। 

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago