৪০ ঘণ্টায়ও খোঁজ মেলেনি বঙ্গোপসাগরে ঝাঁপ দেওয়া ৯ জেলের
বরগুনা থেকে বঙ্গোপসাগরে যাওয়া একটি মাছ ধরার ট্রলার শুক্রবার রাতে জলদস্যুর কবলে পড়ে। জলদস্যুর হামলা থেকে বাঁচতে সাগরে ঝাঁপ দেন ট্রলারের ৯ জেলে।
তাদের সন্ধানে আজ রোববার দুপুর থেকে কোস্টগার্ড ও র্যাব যৌথভাবে সাগরে অভিযান চালাচ্ছে।
সকালে বরগুনার মৎস্য ট্রলার মালিক সমিতির সদস্যরা ৫টি ট্রলারে সাগরে উদ্ধারাভিযানে গেলেও, তারা ওই ৯ জেলের সন্ধান পাননি।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন-কাইউম জোমাদ্দার (৩৫), ইয়াছিন জোমাদ্দার (৩২), আবুল কালাম (৫২), শফিকুল মাঝি (৩৫), খাইরুল ইসলাম (৪০), আবদুল আলীম (৫৫), ফরিদ (৩৮), আবদুল হাই (৪০)। অপর এক জেলের নাম পাওয়া যায়নি।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ১৮ জন জেলেসহ একটি ট্রলার বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার পথে শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে পাথরঘাটা থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে জলদস্যুর কবলে পড়ে। জলদস্যুরা ওই ট্রলারের জেলেদের কুপিয়ে আহত করে।
হামলা থেকে বাঁচতে ৯ জেলে সাগরে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তবে অপর একটি ট্রলারের জেলেরা জলদস্যুদের হামলায় আহত ৯ জেলেকে উদ্ধার করে শনিবার সন্ধ্যায় পাথরঘাটায় নিয়ে আসে এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
ফিরে আসা জেলেরা হলেন-মিরাজ হোসেন (৪০), আফজাল হোসেন (৪২), আলমগীর হোসেন (৫০), রায়হান (২৮), আ. করিম (৪০), খোকন মিয়া(৪৫), নুর মোহাম্মদ (৪৭), মধু মিয়া (৫২) ও আব্দুল হক (৪৫)।
তাদের মধ্যে গুরুতর আহত আব্দুল হক ও মধু মিয়াকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মধু মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জলদস্যুবাহী দ্রুতগামী ট্রলারটি আমাদের ট্রলারের পেছনে ধাক্কা দেয় ও ফাঁকা গুলি করে। আমরা চিৎকার করলে তারা আমাদের ট্রলারে উঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। ডাকাতদের হাত থেকে বাঁচতে আমি ট্রলারের টয়লেটে ঢুকে দরজা আটকে দেই। তারপরও ডাকাতরা দরজা ভেঙে আমাকে বের করে মারধর করে। কিছুক্ষণ পর দেখি আমাদের ট্রলারের অনেক জেলে নেই। তারা ডাকাতদের হাত থেকে রক্ষা পেতে সাগরে ঝাঁপ দেয়।'
এদিকে আজ রোববার সকালে র্যাব-৮ ও কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথ উদ্ধারাভিযান শুরু করেছে। ১টি ট্রলার ও ১টি স্পিড বোট নিয়ে দুপুর ১২টার দিকে তারা সাগরের উদ্দেশে রওনা হয়।
এ বিষয়ে র্যাব-৮ এর পটুয়াখালী কোম্পানি অধিনায়ক সহকারী পুলিশ সুপার তুহিন রেজা রোববার সন্ধ্যায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কোস্টগার্ডের সঙ্গে আমাদের একটা টিম সাগরে উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে। অপর একটি টিম তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমেও কাজ করছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সাগরে নিখোঁজ জেলেদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।'
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় মজুমদার ডেইলি স্টারকে জানান, সাগরে ট্রলার ডাকাতির ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। নৌ-পুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড ও পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
Comments