ঢাকা-দিল্লি আলোচনা: ডলার নয়, লেনদেন হবে টাকা-রুপিতে

বাংলাদেশ ও ভারত নিজেদের মধ্যে লেনদেনের জন্য বিনিময় মুদ্রা হিসেবে ডলারকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে।

বাংলাদেশ ও ভারত নিজেদের মধ্যে লেনদেনের জন্য বিনিময় মুদ্রা হিসেবে ডলারকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে।

গত ২৪-২৫ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ ভারতের শহর বেঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠিত জি২০ অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নরদের বৈঠকের ফাঁকে এই আলোচনা হয়।

সরকারের হিসেব অনুযায়ী প্রতি বছর বাংলাদেশি নাগরিকরা ভারতে চিকিৎসা, পর্যটন ও শিক্ষাখাতে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ আমদানি যে ৩ দেশ থেকে করে তার মধ্যে ভারত অন্যতম।

এই ২ দেশের মধ্যে লেনদেন হয় মার্কিন ডলারে এবং তারপরে তা রুপি বা টাকায় হিসাব করা হয়। এর ফলে উভয়পক্ষকেই বিনিময় হারে কিছু ছাড় দিতে হয়।

যেমন: একজন বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডধারী ভারতে কেনাকাটা করলে রুপির পরিমাণ প্রথমে ডলারে এবং এরপর ডলার থেকে টাকায় রূপান্তরিত হয়। শুধুমাত্র একটি লেনদেনের জন্য ২ বার ডলার রূপান্তরের কারণে কার্ডধারীকে প্রকৃত রুপি-টাকার বিনিময় হারের চেয়ে বেশি অর্থ প্রদান করতে হয়।

ভারত থেকে পণ্য ও পরিষেবা আমদানির ক্ষেত্রের একই হিসাব প্রযোজ্য হয়।

এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার এবং ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস এমন একটি ব্যবস্থার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন, যেখানে লেনদেনের ক্ষেত্রে ডলারে রূপান্তর করতে হবে না।

ভারতে যাওয়া বাংলাদেশিদের কাছে একটি দ্বৈত মুদ্রা কার্ড থাকবে, যেখানে তারা ভ্রমণের আগে ভারতীয় রুপি যোগ করে নিতে পারবেন। একইভাবে কোনো ভারতীয় বাংলাদেশে ভ্রমণের সময় একইভাবে তাদের কার্ডে টাকা যোগ করে নিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বিনিময় হার হবে সরাসরি টাকা থেকে রুপি বা রুপি থেকে টাকায়।

ভারতের সঙ্গে ব্যবসার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই ব্যবসায়ীরা তাদের মধ্যে লেনদেন সম্পন্ন করতে পারবেন।

গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের বৈঠকে এই বিষয়টি উত্থাপন করা হয়।

বৈঠকে আবদুর রউফ তালুকদার জানান, এই পদ্ধতি চালু করা গেছে ভারতকে যে পরিমাণ অর্থপ্রদান করতে হয়, তা আর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে দিতে হবে না এবং এর ফলে রিজার্ভের ওপর চাপও কমবে।

তিনি বলেন, 'রিজার্ভের ওপর চাপ অনেক কমেছে। ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে আমদানি বিল কমেছে। এখন রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স যা আসছে তা দিয়েই আমদানি বিল মেটানো সম্ভব। তবে অন্যান্য খাত থেকেও ডলার আসা দরকার। সেক্ষেত্রে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের সঙ্গে এই ব্যবস্থা সাহায্য করতে পারে।'

শক্তিকান্ত দাস দ্বৈত মুদ্রার বিষয়ে আগ্রহী এবং ২ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে কাজ করবে।

এটি প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে।

ব্যবসায়ীদের এই পদ্ধতিতে বিল পরিশোধের জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে। কারণ এর জন্য এই পদ্ধতিতে বেসরকারি ব্যাংকগুলোকেও যুক্ত করতে হবে।

গভর্নর শিগগির বিষয়টি নিয়ে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন।

Comments

The Daily Star  | English

Secondary schools, colleges to open from Sunday amid heatwave

The government today decided to reopen secondary schools, colleges, madrasas, and technical education institutions and asked the authorities concerned to resume regular classes and activities in those institutes from Sunday amid the ongoing heatwave

2h ago