মৌলভীবাজারে ১ হাজার ভূমিহীন পরিবার নিজ ঘরে উঠবে কাল

মৌলভীবাজারে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। ছবি: স্টার

রমজান আলী। বয়স ৪৫ বছর। পায়ে সমস্যা থাকার কারণে কোনো কাজ করতে পারেন না। ভিক্ষা করেই চলে সংসার। আত্মীয়স্বজনরা এই সময়ে নেই পাশে।  থাকেন মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া শহরের একটি কলোনির ভাড়া বাড়িতে। রমজান আলীর ৭ মেয়ে। ভিক্ষা করেই বিয়ে দিয়েছেন ৩ জনকে।

তিনি মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, 'ছোট থেকেই জয়পাশা কলোনিতে থাকি। নিজের ঘরের থাকার আমেজ কখনো পাইনি। আর নিজের একটা ভিটা থাকবে এমন কথা চিন্তা করাতো স্বপ্নের মতো। তবে এবার আমিও স্বপ্নের মতো একটি ঘর পাবো। কুলাউড়া শহরের পাশেই ২ শতক জমির মালিক হবো। নতুন ঘরেই এবারের রোজা শুরু করবো। ঘরদাতার জন্য রোজার প্রথম থেকেই দোয়া করবো। অবাক হচ্ছি। আর ঘরভাড়া দিতে হবে না। ঘরের মালিক হবো। বিষয়টা কল্পনার মতো। আগামীকাল নতুন ঘরে উঠবো।'

রমজান আলীর স্ত্রী রেহানা বেগম বলেন, 'আমার স্বামী ভিক্ষা করে যা আয় করত, তা দিয়ে কলোনির বাসাভাড়া ও খাবারের টাকাই ঠিকমতো হতো না। মাছ মাংস কবে খেয়েছি ভুলে গেছি। কখনো নতুন পোশাক পরতে পারিনি। খুব কষ্ট করে চলেছি। ঘর পাওয়ার পর আমাদের কষ্ট অনেকটায় দূর হবে।'

শুধু রমজান আলীই নয়, চতুর্থ ধাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর উপহার পাচ্ছে মৌলভীবাজার জেলার মোট ১ হাজার ৪টি পরিবার। আগামী ২২ মার্চ ঘরের চাবি হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানান যায়, মৌলভীবাজারে এ পর্যন্ত মোট ৪ হাজার ৬১১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১ হাজার ১২৬টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ১ হাজার ১৫১টি, তৃতীয় পর্যায়ে ৬৫৫টি। চতুর্থ ধাপে ৭ উপজেলায় উপহারের নতুন ঘরের সংখ্যা ১ হাজার ৪টি।

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, 'যারা প্রধানমন্ত্রীর ঘর পাচ্ছেন তারা আগে অনেকটা যাযাবরের মতো ছিলেন। ঘর দেওয়ার পাশাপাশি তাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে স্বাবলম্বী হওয়ারও সুযোগ দেওয়া হবে। ঘরের বাসিন্দারা এখানে হাঁস-মুরগি পালনসহ সবজি চাষেরও সুযোগ পাবেন।'

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh's exports stuck in EU, US orbit

Non-garment exports struggle with quality standards and logistics bottlenecks

13h ago