পা ধরতে বাধ্য করার অভিযোগ ওঠা সেই বিচারককে বদলি

বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মাকে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার অভিযোগ ওঠায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনকে বদলি করা হয়েছে।
এক শিক্ষার্থীর মাকে বিচারকের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার অভিযোগে মঙ্গলবার বিকেলে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মাকে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার অভিযোগ ওঠায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনকে বদলি করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর পরামর্শে রুবাইয়া ইয়াসমিনকে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করেছে সরকার।

আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ এসেছে। এছাড়া গণমাধ্যমেও তার বিরুদ্ধে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বেতন ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক আর্থিক সুবিধা পেলেও রুবাইয়া ইয়াসমিন মন্ত্রণালয়ের বাইরে বিচারক হিসেবে কোনো কাজ করতে পারবেন না।

তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে ইতিমধ্যে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রাব্বানী জানান, প্রধান বিচারপতির নির্দেশে রুবাইয়া ইয়াসমিনকে বগুড়া থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার পর আইন মন্ত্রণালয় আজ প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টে চিঠি পাঠিয়েছে।

বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিনের মেয়ে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী, সব শিক্ষার্থীর পালাক্রমে শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেওয়ার কথা থাকলেও বিচারকের মেয়ে কখনোই ঝাড়ু দেয় না। বিষয়টি নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় তার।

সোমবার রাতে স্কুলের একটি ফেসবুক গ্রুপে সহপাঠীদের কটাক্ষ করে একটি পোস্ট লেখে বিচারকের মেয়ে। এতে কয়েকজন সহপাঠী প্রতিবাদ জানায়।

পরদিন সকালে স্কুলের অভিভাবক সমাবেশে এসে বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিন ৩ শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবককে শিক্ষকের মাধ্যমে ডেকে আনেন। ফেসবুকে তাকে ও তার মেয়েকে নিয়ে 'অপমানজনক কথা' বলা হয়েছে এমন দাবি করে সাইবার অপরাধের অভিযোগে মামলা করার হুমকি দেন তিনি।

শিক্ষার্থীরা জানান, অভিভাবকদের ডেকে নিয়ে মামলার হুমকি দেওয়ার এক পর্যায়ে এক শিক্ষার্থীর মাকে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন ওই বিচারক। সেসময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোছা. রাবেয়া খাতুন সেই বিচারকের পক্ষ নিয়ে শিক্ষার্থীদের শাসান।

 

 

Comments