‘স্মৃতিসৌধে আসতে পারলে আত্মার তৃষ্ণা মেটে’

শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় জাতির বীর সন্তানদের স্মরণ করছে দেশের মানুষ। 
স্বাধীনতা দিবস
শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় জাতির বীর সন্তানদের স্মরণ করছে দেশ। লাল সবুজের পতাকা হাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসেন অনেকে। ছবি: পলাশ খান/ স্টার

স্বাধীনতার ৫৩ বছরে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় জাতির বীর সন্তানদের স্মরণ করছে দেশের মানুষ। 

রোববার ভোর ৫:৫৬ মিনিটে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পরে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে স্মৃতিসৌধ এলাকা ত্যাগ করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। এর পরেই স্মৃতিসৌধ এলাকা সর্বস্তরের মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুলের ডালা নিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি বাড়তে থাকে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। নানা সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান সরকারি, বেসরকারি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ। তাদের ফুলেল শ্রদ্ধায় ভরে ওঠে শহীদ বেদি।

এদিন স্মৃতিসৌধ এলাকায় লালসবুজের পতাকা হাতে স্মৃতিসৌধে দেখা গেছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।

দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বলেন, 'প্রতিবছর দুইটি দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসার চেষ্টা করি। আসতে পারলে ভালো লাগে। বয়স বেড়ে গেছে। এবার রোজার কারণে পরিবার থেকে আসতে বারন করেছিল কিন্তু আমি এসেছি কারণ স্মৃতিসৌধে আসতে পারলে আত্মার তৃষ্ণা মেটে।'

স্কুলপড়ুয়া সন্তানদের নিয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আব্দুল আলী বলেন, 'প্রতিবছরের তুলনায় রোজার কারণে এবার স্মৃতিসৌধে লোকজন তুলনামূলক কম এসেছে। সন্তানদের নিয়ে প্রতিবছর এই দিনে স্মৃতিসৌধে আসি। এবারো এসেছি। ভালো লাগছে।'

তিনি বলেন, 'সন্তানরা যেন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয় এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয় একারণে দুই সন্তানকে সাথে নিয়ে এসেছি। ওরা দেশকে নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করছে আমি উত্তর দিচ্ছি।'

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুনতাহিন আক্তার মীম রাজধানীর আদাবর এলাকা থেকে এক বান্ধবীকে নিয়ে স্মৃতিসৌধে এসেছিলেন। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, রোজা রেখে লোকসমাগমের ভিড়ে আসাটা যদিও কষ্টকর। কিন্তু যারা দেশের জন্য নিজেদের জীবনকে উৎসর্গ করেছে তাদের সম্মানটা তো অন্য মাপের। যে কোনো পরিস্থিতিতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসাটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই এসেছি। ভালো লাগছে।'

Comments