শ্রীমঙ্গলে পথচারী-ছিন্নমূলদের জন্য ইফতার উপহার

মাহমুদ রিকশা চালান মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা শহরে। রোববার রোজা রেখে রিকশা নিয়ে বের হলেও, সারাদিনে খুব একটা আয় হয়নি। সন্ধ্যায় ভাবছিলেন ইফতার করবেন কীভাবে। পথেই পেয়ে গেলেন ইফতার উপহার।
শ্রীমঙ্গল শহরে প্রতিদিন রাস্তায় এভাবে ইফতারি বিতরণ করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

মাহমুদ রিকশা চালান মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা শহরে। রোববার রোজা রেখে রিকশা নিয়ে বের হলেও, সারাদিনে খুব একটা আয় হয়নি। সন্ধ্যায় ভাবছিলেন ইফতার করবেন কীভাবে। পথেই পেয়ে গেলেন ইফতার উপহার।

দ্য ডেইলি স্টারকে মাহমুদ বলেন, 'সারাদিন রোজা রেখে রিকশা চালিয়ে যে আয় হয়, তাতে সংসার চলে না। ইফতারির দোকানে গিয়ে টাকা খরচ করতে চাই না। দোকান থেকে ইফতারি আমাদের মতো গরিব মানুষের পক্ষে কেনা সম্ভব নয়। এখানে বিনামূল্যে ইফতারির প্যাকেট পেয়ে ভালো লাগছে।'

আরেক পথশিশুর সঙ্গে দেখা হলো। গতকাল সে ইফতার করতে পারেনি। আজও ইফতারের আগে ভাবছিল কিছুই পাবে না। শিশুটি জানায়, 'মনে কষ্ট নিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি একজন ডাকছেন প্যাকেট হাতে নিয়ে। কাছে যেতেই বললেন, এটি আমার জন্য ইফতার প্যাকেট। হাতে পেয়েই মন ভালো হয়ে গেল।' 

শ্রীমঙ্গল শহরে প্রতিদিন এমন ২০০ পথশিশু, ছিন্নমূল, রিকশাচালক বা দিনমজুরকে ইফতারি বিতরণ করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। রমজানের প্রথম দিন থেকে এ ইফতারি বিতরণ শুরু হয় এবং রমজানের শেষ দিন পর্যন্ত এটি চলবে বলে জানা গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যাদের জীবন পথেই, পথ চলতে চলতে ইফতারের সময় ঘনিয়ে এলেও, যারা নানা কারণে বাড়ি পৌঁছাতে পারেন না, কিংবা যাদের যাওয়ার কোনো জায়গাই নেই এমন মানুষদের জন্য এই আয়োজন।'

তিনি আরও বলেন, 'আমি আমার বেতন থেকে প্রথম রোজা থেকে ২০০ পথশিশু, রিকশাচালক বা মেহনতি মানুষকে ইফতার দেওয়া শুরু করেছি।'

এ প্রসঙ্গে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এমন অনন্য উদ্যোগের সঙ্গে থাকতে পেরে ভালো লাগছে। শ্রীমঙ্গলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুনের উদ্যোগ আরও প্রসারিত হোক এটাই প্রত্যাশা।'
 

Comments