নির্বাচনে সাংবাদিকদের মোটরসাইকেলে নিষেধাজ্ঞা ‘দুরভিসন্ধিমূলক’: টিআইবি

নির্বাচনের দিন সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারে অনুমতি না দেওয়াকে 'দুরভিসন্ধিমূলক' আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলেছে, ভোটকেন্দ্র থেকে সরাসরি সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞাসহ আরও যেসব বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে তা গণমাধ্যম কর্মীদের আজ্ঞাবহ করার জন্য।

নির্বাচনে গণমাধ্যমকর্মীদের ভোটকক্ষে প্রবেশসহ নির্বাচনী এলাকায় সংবাদ সংগ্রহের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গত বুধবার একটি নীতিমালা প্রকাশ করেছে। ইসি বলছে, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এই নীতিমালা করা হয়েছে।

টিআইবি বলেছে, নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকর্মীরা 'মোটরসাইকেল' ব্যবহার, '১০ মিনিটের বেশি' ভোটকক্ষে অবস্থান ও  ভোটকক্ষ থেকে কোনোভাবেই 'সরাসরি সম্প্রচার' করতে পারবে না বিধানাবলী সম্বলিত যে নীতিমালা করা হয়েছে তা সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকা পালনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। এ ছাড়া 'প্রিজাইডিং অফিসারকে অবহিত করে ভোটগ্রহণ কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ, ছবি তোলা ও ভিডিও ধারণ' করতে পারবে এবং 'রিটার্নিং অফিসার স্বীয় বিবেচনায় যৌক্তিক সংখ্যক সাংবাদিককে অনুমোদন ও কার্ড ইস্যু করতে পারবেন' মর্মে যে বিধান রাখা হয়েছে, তা মূলত গণমাধ্যম কর্মীদের আজ্ঞাবহ সাংবাদিকতায় বাধ্য করার অপচেষ্টা।

বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'সম্প্রতি জারি করা পরিপত্রে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি সাংবাদিকদের কার্যক্রম শেকলবদ্ধ করে তুলছে। মোটরসাইকেল স্থানীয় পর্যায়ে সংবাদকর্মীদের দায়িত্বপালনের একটি অপরিহার্য বাহন। প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেক কেন্দ্র আছে যেখানে গাড়ি বা অন্য কোনো যানবাহনে পৌঁছানো সম্ভব নয়। তা ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে একটি গাড়ি ভাড়া করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়। এ রকম একটি পরিস্থিতিতে নির্বাচনের দিন গণমাধ্যমকর্মীদের মোটরসাইকেল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দুরভিসন্ধিমূলক। নির্বাচন কমিশন চিহ্নিত ''গোপন বুথের ডাকাতদের'' রক্ষায় এই নিয়মের আমদানি কি না সেটাও স্পষ্ট হওয়া জরুরি।'

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'নির্বাচন কমিশন সংবাদকর্মীদের ভোট কাভারেজের অনুমতি দিয়ে কার্ড প্রদান করার পর ভোটকক্ষে ঢুকতে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার বাড়তি অনুমতির প্রয়োজনীয়তা কী, তা বোধগম্য নয়। তা ছাড়া বর্তমান প্রেক্ষাপটে যদি কোনো ভোটকক্ষে অনিয়ম হয়, সেক্ষেত্রে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা কি অনুমতি দিবেন? আর অনুমতি না দিলে নির্বাচনী অনিয়মের ছবি তোলা ও তথ্য সংগ্রহ কী ধরনের বাধার সৃষ্টি হবে, তা নীতিমালা তৈরিতে কমিশনের বিচার্য ছিল বলে বোধগম্য হচ্ছে না।

প্রকাশিত নীতিমালাটি বাতিলের দাবি জানিয়ে টিআইবি বলেছে, 'প্রয়োজনে বৈশ্বিক চর্চার সঙ্গে মিলিয়ে ও গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি যথোপযুক্ত নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে।'

টিআইবি মনে করছে, 'নির্বাচনের খবর সংগ্রহ করা নিয়ে কমিশনের বিধি-নিষেধের তালিকা যত দীর্ঘ হচ্ছে, দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা এবং গণতন্ত্র ততোটাই দুর্বল ও ক্ষয়িষ্ণু হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Portfolios of 7 advisers redistributed in major shakeup

Sk Bashir Uddin gets commerce, textile ministries; Farooki gets cultural affairs ministry

2h ago