বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের শেষ দিন আজ, কাল উঠবেন ‘রাষ্ট্রপতি লজে’

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ছবি: বাসস

আজ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের শেষ কার্যদিবস। তিনি আগামীকাল সকালে বঙ্গভবনে এক শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গভবন ত্যাগ করবেন তিনি।

আজ আবদুল হামিদকে পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্তিতে বঙ্গভবন থেকে বিদায় জানানো হবে। দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে তার দুই মেয়াদে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বঙ্গভবনে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন তিনি।

আগামীকাল নতুন রাষ্ট্রপতির কাছে শান্তিপূর্ণ এবং সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর হবে। কাল দুপুরের পর থেকে আবদুল হামিদ আর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি থাকছেন না।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবিদ মো. সাহাবুদ্দিন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হবেন। বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার পরিবার নিয়ে আবার গণমানুষের কাতারে সামিল হবেন।

একটি পূর্ণ মোটর শোভাযাত্রায় আবদুল হামিদকে বিদায় দেওয়া হবে। এরপরে তাকে আবার ট্রাফিক লাইট এবং মোড়ে মোড়ে থামার অভ্যাস করতে হবে।

আবদুল হামিদ রাজধানীর নিকুঞ্জে তার নিজের বাসা 'রাষ্ট্রপতি লজে' থাকবেন। সেখানে পরিবারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী স্থানান্তর করা হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন বাসসকে বলেন, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে বিদায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আগামীকাল দুপুরে বঙ্গভবন ত্যাগ করবেন।

সন্ধ্যায় নতুন রাষ্ট্রপতি আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গভবনে উঠবেন। তবে আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে পরদিন সকালে নতুন রাষ্ট্রপতিকে 'গার্ড অব অনার' দেওয়া হবে।

প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) একটি সুসজ্জিত চৌকস অশ্বারোহী দল বিদায়ী রাষ্ট্রপতিকে অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে 'গার্ড অব অনার' প্রদান করবে।

বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বঙ্গভবন গেট থেকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যাবেন। মাঝখান দিয়ে খোলা জিপে করে রাষ্ট্রপতি যাবেন। খোলা জিপে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে তাকে বিদায় জানানো হবে। সেখান থেকে তাকে মোটর শোভাযাত্রায় নিকুঞ্জের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হবে বলেও জানান আবেদিন।

টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ১০ বছর ৪১ দিন পর অবসরে যাচ্ছেন আবদুল হামিদ।

প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও সংসদ সদস্য আবদুল হামিদ পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন।

এর আগে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ২০১৩ সালের ১৪ মার্চ প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন তিনি। জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর ২০১৩ সালের ২০ মার্চ তিনি ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হন।

পরে আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।

রাষ্ট্রপতি হামিদ ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার কামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৯ সালে ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৬৯ সালের শেষ দিকে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

আবদুল হামিদ নবম সংসদে স্পিকার নির্বাচিত হন এবং ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ডেপুটি স্পিকার ছিলেন।

আবদুল হামিদ এর আগে ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতার পর থেকে সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

Comments

The Daily Star  | English

Over 45 lakh cases pending in courts

Each HC judge is burdened with 6,552 cases, while Appellate Division judges are handling 4,446 cases each, and lower court judges 1,977 cases each.

1d ago