৭ ঘণ্টা পর ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ট্রেন যোগাযোগ চালু

অভিযুক্ত স্টেশন মাস্টারকে ইতোমধ্যে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উল্লাপাড়া স্টেশনে মালবাহী ট্রেনের লাইনচ্যুত বগি পরীক্ষা করছেন রেল কর্তৃপক্ষের লোকজন। ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে প্রায় ৭ ঘণ্টা ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার পর আজ শুক্রবার রাত পৌনে ৯টা থেকে আবারও ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।

স্টেশন মাস্টারের ভুলের কারণে মালবাহী ট্রেনটি লাইন পরিবর্তনের সময় লাইনচ্যুত হয়ে দিনভর ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। অভিযুক্ত স্টেশন মাস্টারকে ইতোমধ্যে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে পরিবহন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন এবং রেলের পশ্চিম জোনের পাকশী বিভাগের প্রকৌশলী বীরবল মণ্ডল এসব তথ্য জানিয়েছেন। 

আজ শুক্রবার বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম পার থেকে একটি মালবাহী ট্রেন খালি বগি নিয়ে ঈশ্বরদীর দিকে যাচ্ছিল। পথে দুপুর পৌনে ২টার দিকে উল্লাপাড়া স্টেশনে সান্টিং (লাইন পরিবর্তন) করার সময় মালবাহী ট্রেনটির ২টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এসময় উভয় প্রান্তে ৭টি আন্তনগর ট্রেন আটকা পড়ে বলে জানায় রেলওয়ে সূত্র।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে পরিবহন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উল্লাপাড়ায় ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ায় এবং বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এসময় থেকেই ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।'

'পরে ঈশ্বরদী থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন এসে বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিট থেকে উদ্ধার কাজ শুরু হয়। প্রায় ৭ ঘণ্টা পর দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনটি উদ্ধার করে রাত ৮টা ৪৫ মিনিট থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়', বলেন রেলওয়ের এ পরিবহন কর্মকর্তা।

রেলের পশ্চিম জোনের পাকশী বিভাগের প্রকৌশলী বীরবল মণ্ডল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্টেশন মাস্টারের ভুলের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। অসতর্কতাবশত সান্টিং (লাইন পরিবর্তন) করার সময় পয়েন্টিংয়ের ভুলের কারণে মালবাহী ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়।'

এ ঘটনার পর থেকেই উল্লাপাড়া স্টেশনে দ্বায়িত্বরত চুক্তিভিত্তিক স্টেশন মাস্টার আব্দুল গফুর সটকে পড়েন বলে রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে। রেলবিভাগ জরুরিভিত্তিতে জামতলি স্টেশনের মাস্টার আব্দুল বাতেনকে উল্লাপাড়া স্টেশনের দ্বায়িত্ব দিয়েছে।

রেলওয়ের পাকশি বিভাগীয় ম্যানেজার শাহ সুফি নুর মোহাম্মাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রাথমিকভাবে স্টেশন মাস্টারের ভুল পাওয়ার পর তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।'

এ ঘটনায় বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তাকে প্রধান করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান বিভাগীয় ম্যানেজার। ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেবে বলে জানান তিনি।

এদিকে, ট্রেন চলাচলে বন্ধ হয়ে পড়ায় এসব ট্রেনের প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার যাত্রী বিপাকে পড়েন। অনেকে ট্রেন ছেড়ে ভিন্ন পথে গন্তব্যে পৌঁছালেও দূরপাল্লার যাত্রীদের দিনভর দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

Comments