আ. লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে যুবলীগ নেতার মামলা, ২৬৬ আসামির মধ্যে ছাত্রলীগের ১

মামলার বাদী জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন হাওলাদারের দাবি, এই মামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি।
গত ২০ মে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এক যুবলীগ নেতার করা মামলায় ১৬ জনের নামোল্লেখ ও ২০০/২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় ১৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে ছাত্রলীগের একজন 'সক্রিয়' কর্মীকে।

তবে মামলার বাদী জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন হাওলাদারের দাবি, এই মামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি।

গত ২০ মে শনিবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সেদিন সকাল ১০টার দিকে পটুয়াখালী জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জড়ো হচ্ছিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সেই সময় স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা 'শান্তি মিছিল' নিয়ে ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হন।

এ ঘটনায় সদর থানায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশের পক্ষ থেকে ৩টি মামলা করা হয়েছে। তিন মামলায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নাম উল্লেখ করে মোট ৬১ জন ও অজ্ঞাত ৭০০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।

পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ছাত্রলীগ কর্মী রায়হান হোসেন, পটুয়াখালী থানার এসআই (নিরস্ত্র) বিপুল হাওলাদার ও জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন হাওলাদার বাদী হয়ে পটুয়াখালী থানায় পৃথক মামলা করেন।

এর মধ্যে, নাসির উদ্দিন হাওলাদার বাদী হয়ে যে মামলাটি করেছেন তাতে পটুয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন, সাধারণ সম্পাদক শিপুল খানসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ১৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে ছাত্রলীগের কর্মী শহরের সবুজবাগ ৯নং লেনের বাসিন্দা মো. লিটনকে।

অভিযোগ করা হয়েছে, গত ২০ মে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের দিন মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে শহরের মুসলিমপাড়া এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিলে হামলা চালান।

জানতে চাইলে মামলার বাদী নাসির উদ্দিন হাওলাদার বলেন, 'এই মামলা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। কে আসামি তাও বলতে পারি না। এটা জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে জিজ্ঞেস করুন।'

ছাত্রলীগ কর্মী লিটনের অভিযোগ, ষড়যন্ত্র করে তাকে এই মামলায় ঢোকানো হয়েছে।

তিনি বলেন, 'আমি ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী। ছাত্রজীবনের শুরু থেকেই ছাত্রলীগ করি। ষড়যন্ত্র করে বিএনপির মামলায় ঢুকিয়ে আমার ইমেজ নষ্ট করা হয়েছে। আমি দলের সিনিয়র নেতাদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছি। তারা বলেছেন বিষয়টি দেখবেন।'

এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, 'লিটন আমাদের ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী। কেউ ষড়যন্ত্র করে ওর নাম এই মামলায় ঢুকিয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের অনুরোধ করেছি।'

পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন বলেন, 'বিষয়টি ভুলবশত হয়েছে, ঠিক করা হচ্ছে।'

পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, 'এই মামলার বাদী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এবং একজন আসামিও ছাত্রলীগের। এ বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।'

Comments