চট্টগ্রামে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আত্মদানকারী সেনাদের স্মরণে ‘ওয়ার গ্রেভস উইক’

ওয়ার সিমেট্রি
চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রি। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভস কমিশন (সিডব্লিউজিসি) আয়োজিত 'ওয়ার গ্রেভস উইক' অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

গত ২০ মে এ আয়োজন শুরু হয়েছে, চলবে ২৮ মে পর্যন্ত। এ আয়োজনের লক্ষ্য সিডব্লিউজিসি এবং কমনওয়েলথ ওয়ার গ্রেভ ফাউন্ডেশনের কাজের স্বীকৃতি ও সচেতনতা বৃদ্ধি। 

১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রি সাহসী কমনওয়েলথ সেনাদের এবং যারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রাণ হারিয়েছিলেন, তাদের জন্য একটি গৌরবপূর্ণ শ্রদ্ধাপূর্ণ স্থান। সিডব্লিউজিসি স্থানটি রক্ষণাবেক্ষণ করছে।

সিডব্লিউজিসি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার হিল্লোল সাত্তার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আবিষ্কার করুন, শিখুন এবং মনে রাখুন (ডিসকভার, লার্ন এন্ড রিমেম্বার)' থিমে বাংলাদেশে এই উইক পালিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, 'এ বছর বিশ্বব্যাপী আমরা আমাদের কর্মপরিধি প্রসারিত করেছি। বাংলাদেশ, মিশর, ভারত, ইসরাইল, কেনিয়া, পাকিস্তান, তিউনিসিয়া এবং তুরস্কে প্রথমবারের মতো "ওয়ার গ্রেভস  উইক" উপলক্ষে ইভেন্ট আয়োজন করা হয়েছে।'

চট্টগ্রামে গত বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের নিয়ে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ওয়ার সিমেট্রি
চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রি। ছবি: রাজীব রায়হান/স্টার

হিল্লোল বলেন, 'এ আয়োজনের মাধ্যমে আমরা অংশগ্রহণকারীদের আমাদের কার্যক্রম সম্পর্কে জানার জন্য এবং যারা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাদের স্মরণের জন্য আমন্ত্রণ জানাই।' 

বৃহস্পতিবারের চট্টগ্রামের ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের মোট ৪০ জন শিক্ষার্থী এবং দুই শিক্ষক চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রিতে একটি অধিবেশনে যোগ দেন। হিল্লোল সাত্তার বলেন, 'আমরা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিই এবং তাদেরকে সিমেট্রি পরিদর্শনের সুযোগ দিই।'

সপ্তাহটি ১৯১৭ সালের ২১ মে রাজকীয় সনদের মাধ্যমে কমিশন গঠনের বার্ষিকীর সঙ্গে মিল রেখে পালন করা হয়।

চট্টগ্রাম কমনওয়েলথ ওয়ার সিমেট্রি 

চট্টগ্রাম কমনওয়েলথ ওয়ার সিমেট্রি শুধু স্থানীয়দের জন্যই নয়, দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের জন্যও একটি মনোমুগ্ধকর পর্যটন গন্তব্য। ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সিমেট্রি সাহসী কমনওয়েলথ সৈন্যদের এবং অন্যান্য যারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় প্রাণ হারিয়েছিলেন, তাদের জন্য একটি গৌরবপূর্ণ শ্রদ্ধাপূর্ণ স্থান হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আর্ট ইনস্টিটিউটের বিপরীতে বাদশা মিয়া চৌধুরী রোডে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে ৭ একর জায়গায় অবস্থিত এই সিমেট্রিতে প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শনার্থী আসেন।

প্রধান ফটক দিয়ে কবরস্থানে প্রবেশ করার পরে দর্শনার্থীদের চোখে পড়বে একটি বড় ক্রস, যা শ্রদ্ধা ও আধ্যাত্মিকতার অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। প্রতিটি কবরে মৃত ব্যক্তির নাম, জাতীয়তা, বয়স ও মৃত্যুর তারিখ উল্লেখ আছে। 

অনেক কবরে এপিটাফও আছে, পাশে আছে ছোট একটি বাগান। এই ছিমছাম সিমেট্রিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহতদের ৭৫৫টি কবর রয়েছে।

এই সেনারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বার্মা ফ্রন্টে জাপানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল। সেখানে যুদ্ধবহির্ভূত ৪ ব্রিটিশ সামরিক কর্মীকেও সমাহিত করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

JnU second campus: Project stalled amid bureaucratic hurdles

The construction of Jagannath University’s long-awaited second campus in Keraniganj has stalled due to bureaucratic delays.

6h ago