আজ আমাদের ছুটি
'আজ আমাদের ছুটি, ও ভাই/ আজ আমাদের ছুটি...' রবীন্দ্রনাথের কবিতার মতো নগরবাসীরও আজ থেকে শুরু হয়ে গেছে ঈদের ছুটি। নির্বাহী আদেশে এবার একদিন বাড়ানো হয়েছে ঈদের ছুটি। ইতোমধ্যে অধিকাংশ রাজধানীবাসীই ঢাকা ছেড়েছেন। বাসস্ট্যান্ড, রেলওয়ে স্টেশন, লঞ্চ ঘাটে মানুষের ভিড় লক্ষ করা গেলেও কর্মব্যস্ত রাজধানী ঢাকায় নিত্যদিনের মতো নেই কোলাহল, যানজট, মানুষের ভিড়।
এরইমধ্যে সকাল থেকেই চলছে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি মাথায় করে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বেরোচ্ছেন না নগরবাসী। যার ফলে রাস্তায় গণপরিবহনের সংখ্যাও অপ্রতুল। রাস্তায় যারা বেরিয়েছেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগই বেরিয়েছেন ব্যক্তিগত পরিবহনে। এই সুযোগে রিকশাচালকদেরও মিলেছে খানিকটা জিরিয়ে নেওয়ার ফুসরত। শাহবাগ পুলিশ বক্সের সামনে দেখা গেল এমনই চিত্র।
রিকশাচালক আমজাদ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মানুষ সব বাড়িত চইলা গেছে। বিষ্টিত রাস্তাঘাটত মানুষ নাই। ৬টা বাজে রিশকা লইয়া বাইর অইয়া অহন তরি খালি চাইর টিরিপ মারছি!'
বাংলাবাজার যাওয়ার জন্য রাজধানীর কাঁটাবনে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন হাসমত আলী। তিনি বলেন, 'বৃষ্টির মধ্যে এক ঘণ্টা যাবত দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু বাসের দেখা নেই। রিকশা- সিএনজি আছে, রাস্তাঘাট ফাঁকা সত্ত্বেও তারা ভাড়া বেশি চাচ্ছে।'
ফার্মগেটে ফাঁকা রাস্তায় বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর হঠাৎই দেখা মিললো একটি বাসের। বৃষ্টির মধ্যে বাস থেকে নেমে ওভারব্রিজের নিচে এসে দাঁড়ালেন জনৈক যাত্রী। তিনি বললেন, রাস্তাঘাট আজ ভীষণ ফাঁকা। যাত্রাবাড়ী থেকে মাত্র ১৫ মিনিটে আসলাম। অন্যদিন এই সময়ে আসার কথা ভাবাই যায় না।'
তবে ফাঁকা রাজধানীতে সকাল থেকে হওয়া বৃষ্টি নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে কারও কারও জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে অভিশাপও। তেমনই একজন জুতা সেলাইয়ের কাজ করা হামিদুর রহমান। শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের সামনে জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন তিনি। বৃষ্টি হওয়ায় ফুটপাতে পলিথিনের আচ্ছাদনে মুড়িয়ে মানুষের অপেক্ষা করছিলেন তিনি। কিন্তু সকাল থেকেই নেই গ্রাহকের দেখা।
বললেন, 'মানুষ সব বাড়িত গেছেগা। আমাগো যাওয়ার জায়গাও নেই। ঈদের সময় ঢাকাত থাকমু। বাড়ি গেলে মেলা খরচপাতি!'
রাজধানীর শাহবাগ, কাঁটাবন, কারওয়ান বাজার ঘুরে ছবিগুলো তুলেছেন আহমাদ ইশতিয়াক।
Comments