বইসা গেলে ৩০০, খাড়াইয়া গেলে ২০০

বইসা গেলে ৩০০, খাড়াইয়া গেলে ২০০
ছবি: স্টার

বইসা গেলে তিনশ, খাড়াইয়া গেলে দুইশ।‌ কুমিল্লা তিনশ, তিনশ কুমিল্লা...! নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় লোকাল বাসের হেলপাররা এমনই হাঁকডাকের সঙ্গে যাত্রীদের ডেকে ডেকে বাসে তুলছেন।‌ 

দুপুর থেকেই রাস্তায় ঘরমুখো যাত্রীর ভিড় ছিল লক্ষ করার মতো। বেশীরভাগ যাত্রীবাহী বাসের টিকিটই ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার বেশ কদিন আগেই অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে। পুরোপুরি গেইট লক হওয়ায় যত্রতত্র থামছে না সেসব বাস।

অন্যদিকে অপেক্ষাকৃত নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে অতিরিক্ত ভাড়া বহন করে সেসব বাসে যাওয়ার সামর্থ্য নেই। ঈদযাত্রার এই সুযোগে শেষ দিনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে লোকাল বাসগুলোও। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ডে দেখা মিলল এমন চিত্রের।

এই পরিস্থিতির জন্য যাত্রীরা দায়ী করছেন সড়কে বাসের দুষ্প্রাপ্যতাকে। সোহরাব হোসেন নামের এক যাত্রী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অন্য সব ঈদের চেয়ে এবার ঢাকা চিটাগাং হাই রোডে লোকাল বাসের সংখ্যা কম। অন্য ঈদে লোকাল বাসে যেখানে কুমিল্লা ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় যাই, এবার কুমিল্লার ভাড়া চায় ৩০০ টাকা। ২০০ টাকা হলে দাঁড়িয়ে নিবে! এদিকে বৃষ্টিও হচ্ছে, উঠে যেতে হবে, এখন কিছুই করার নেই!'

সাইনবোর্ড থেকে ফেনী যাবেন নারায়ণগঞ্জের তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থী আবু ওসমান। আবু ওসমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফেনী পর্যন্ত এখন কোনো লোকাল বাস নেই। সরাসরি বাস আছে। কিন্তু ভাড়া বেশি। ঈদের কারণে ওরা ৪৫০ টাকা ভাড়া চাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই লোকাল বাসে করে কুমিল্লায় গিয়ে তারপর ফেনীর বাসে উঠতে হবে। অন্য সময় যেখানে ৩০০ টাকা ভাড়ায় ফেনী যাই, সেখানে এখন এই ভাড়ায় কুমিল্লা গিয়ে তারপর ফেনী যেতে হবে।'

কয়েকজন যাত্রী অভিযোগের স্বরে বলেন, 'লোকাল বাসের হেলপাররা যে ভাড়াই চাচ্ছে সেই ভাড়াতেই যেতে হচ্ছে তাদের। যাত্রীর তুলনায় রাস্তায় লোকাল বাসের সংখ্যা কম থাকায় এবং বৃষ্টির কারণে তাদের দামদরের ও কোনো সুযোগ মিলছে না। হেলপারদের এখন একটাই জবাব, ভাড়ায় মিললে চলেন, না গেলে নাই।'

তবে রাস্তায় ভাড়া নিয়ে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন দূরপাল্লার যাত্রীরা। গোপালগঞ্জ থেকে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাচ্ছেন কারখানা শ্রমিক আলাউদ্দিন মিয়া। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বৃষ্টির মধ্যে সাতসকালেই গোপালগঞ্জ থেকে রওয়ানা দিয়েছি। ঈদ উপলক্ষে সরাসরি বাস ভাড়া ১৮০০ টাকা হাঁকায় ভেঙে ভেঙে বাড়ি যাচ্ছি।'

তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রত্যেক সময় তো বাড়িত যাই না। ঈদে চান্দে বছরে দুই একবার খালি যাই। কিন্তু ঈদে ডাইরেক বাসে যে ভাড়া চায় ওই ভাড়ায় যাওন সম্ভব না। তাই ভাইঙ্গা ভাইঙ্গা  লোকাল বাসে যাই। ভাড়া কম লাগে।' 

আলাউদ্দিন মিয়া আরও বলেন, 'বিষ্টির মইধ্যে সকালবেলা গোপালগঞ্জ থেইকা লোকাল বাসে ফরিদপুর আসলাম। এরপরে ফরিদপুর থেইকা ঢাকা আসলাম। এখন এইখান থেইকা কুমিল্লা যাইয়া তারপরে ফেনীর বাসে উইঠা ফেনী পৌঁছাইয়া এরপরে যাইয়া বাড়িত যামু।'

কেবল বাসই নয় পিকআপ ভ্যান, ট্রাকের ছাদে চেপেও নাড়ির টানে ঈদের একদিন আগে বাড়ি ফিরেছেন সাধারণ মানুষ।

 

Comments

The Daily Star  | English

Threat of fresh Rohingya influx looms as clashes erupt in Myanmar

Gunfire and explosions were heard late Friday night from villages across the border in Myanmar opposite Whykong union in Teknaf upazila of Cox’s Bazar. Residents, gripped by panic, reported that this was the most intense gunfire they had heard in months.

2h ago