‘দুর্নীতিকে দূরে ঠেলে আন্তরিক হলে অসাধ্য সাধন করা যায়, বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে’

আমি চাই, আমাদের দেশে কোনো অর্থনৈতিক বৈষম্য থাকবে না
শেখ হাসিনা
বক্তব্য রাখছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'দুর্নীতিকে দূরে ঠেলে দিয়ে আত্মমর্যাদা বোধ, আত্মসন্মান বোধ ও কাজের প্রতি আন্তরিকতা—এই নিয়ে এগিয়ে যেতে পারলে যে কোনো কঠিন অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটানো যায়। যে কোনো অসাধ্য সাধন করা যায়। সেটা আজকের বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে।'

আজ বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর এবং এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের দলের পক্ষ থেকে যে নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছিলাম, রূপকল্প ২০২১ আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেটার আলোকে সংবিধান অনুসরণ করে, জাতির পিতার ভাষণগুলো অনুসরণ করে নির্বাচনী ইশতেহার আমরা গঠন করি। তারই ভিত্তিতে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেই আমরা আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।'

'যেটা লক্ষ্য স্থির করেছিলাম, সেটা আমরা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। আমি মনে করি খুব কম দেশ এটা করতে পারে। কারণ আমাদের ভৌগলিক সীমাবদ্ধতা আছে, আমাদের জনসংখ্যা অনেক বেশি, সেই জনসংখ্যার অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা—সব ব্যবস্থা করে উন্নয়নের গতিতে নিয়ে যাওয়া, এটা কঠিন কাজ,' বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা চেয়েছি; যেটা জাতির পিতা চেয়েছেন যে, শুদ্ধাচার থাকা। অর্থাৎ জবাবদিহিতা এবং দুর্নীতিকে দূরে ঠেলে দিয়ে আত্মমর্যাদা বোধ, আত্মসন্মান বোধ ও কাজের প্রতি আন্তরিকতা—এই নিয়ে এগিয়ে যেতে পারলে যে কোনো কঠিন অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটানো যায়। যে কোনো অসাধ্য সাধন করা যায়। সেটা আজকের বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে।'

অনেক উন্নত দেশের থেকেও বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক গতিশীল, উন্নয়নের ধারাও অব্যাহত আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'অনেক প্রকল্প আমরা নিয়েছি, এমন এমন এলাকায় যেগুলো একেবারে অবহেলিত ছিল। কখনো কেউ কল্পনাও করতে পারে যে, ওইসব এলাকায়; আমার দক্ষিণাঞ্চলের কথাই বলি, সব থেকে অবহেলিত আমরা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। আজকে সেখানকার অবস্থার পরিবর্তন হয়ে গেছে।'

'তৃণমূলের মানুষের দারিদ্র্যের হার কমে গেছে। তাদের জীবনমান উন্নত হয়েছে। আগে বাংলাদেশে সফর করতে গেলে দেখতাম, ছিন্ন কাপড়, পায়ে কোনো জুতা নেই, পেটে খাবার নেই, চামড়া আর হাড় ছাড়া কিছু নেই, এ রকম মঙ্গা-দুর্ভিক্ষ লেগে থাকত। বাংলাদেশে কিন্তু সেই চিত্র নেই। সেটা পরিবর্তন হয়ে গেছে। যে অঞ্চলের মানুষের একবেলা খাবার জুটাতে পারত না, এখন তারাও কিন্তু ভালো কাপড়-চোপড় পরা...সবার হাতে মোবাইল ফোন আছে, সবাই অন্তত ভালো আছে এইটুকু আমি বলতে পারি,' বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, 'ইচ্ছা থাকলেই যে কাজ করা যায় এবং কাজ করলে তার ফলাফল পাওয়া যায় সেই আমরা প্রমাণ করেছি। আমরা চাই যে, আমাদের দেশে সুশাসন গড়ে উঠবে। আমি চাই, আমাদের দেশে কোনো অর্থনৈতিক বৈষম্য থাকবে না। সব মানুষ উন্নয়নের সুফল পাবে এবং উন্নয়নটা সমগ্র বাংলাদেশজুড়ে হবে, একেবারে তৃণমূল পর্যন্ত মানুষের জীবনমান উন্নত হবে সেটাই আমাদের লক্ষ্য।'

Comments