কুড়িগ্রামে তিস্তায় বিলীন স্পার বাঁধের ৩০ মিটার

লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
কুড়িগ্রামের বুড়িরহাট এলাকায় তিস্তা নদীর পানির তোড়ে ধসে গেছে ৬০ মিটার স্পার বাঁধের ৩০ মিটার। অবশিষ্ট অংশ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে তা রক্ষার চেষ্টা চলছে। সোমবার দুপুরে তোলা ছবি। ছবি: এস দিলীপ রায়/ স্টার

কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে কুড়িগ্রামের রাজারহাট, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতি রয়েছে অপরিবর্তিত। তবে তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার নিচে থাকায় লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।

কুড়িগ্রামের রাজার উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের বুড়িরহাট এলাকায় রোববার রাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬০ মিটার স্পার বাঁধের ৩০ মিটার ধসে গেছে তিস্তা নদীর পানির তোড়ে। বাকি ৩০ মিটার বাঁধ রয়েছে ঝুঁকিতে। সোমবার সকাল থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুভর্তি জিও ব্যাগে ফেলে অবশিষ্ট বাঁধ রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে। বাঁধটি পুরোপুরি ধসে গেলে রাজারহাট উপজেলার ৫ হাজারের বেশি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে।

বুড়িরহাট এলাকার কৃষক মজিবর রহমান (৬৮) সোমবার দুপুরে বলেন, ১৯৯৯ সালে বুড়িরহাট স্পার বাঁধটি নির্মিত হলে তারা তিস্তা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। রোববার রাতে বাঁধের অর্ধেক অংশ ধসে তিস্তা নদীতে বিলীন হয়েছে। বাকি অর্ধেক বাঁধের অবস্থাও ভালো নয়। যে কোনো সময় বাঁধের এ অংশটি ধসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

'স্পার বাঁধটি এত দ্রুত ধসে যাবে আমরা ভাবতেই পারিনি। নতুনভাবে স্পার বাঁধ নির্মাণ করা না হলে তিস্তা নদী আমাদের ধ্বংস করে ফেলবে,' তিনি বলেন।

একই গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ (৬০) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বুড়িরহাট স্পার বাঁধের অর্ধেক অংশ ধসে যাওয়ায় তারা খুব উদ্বেগে আছেন। বাকি অংশ ধসে গেলে তাদের আবাদি জমি ও বসতভিটা হারাতে হবে তিস্তায়।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন সোমবার দুপুরে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বুড়িরহাট স্পার বাঁধটি  চার বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। বাঁধের অবশিষ্ট অংশ বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে রক্ষার চেষ্টা চলছে। যেকোন উপায়ে বাঁধের এ অংশটি রক্ষা করা হবে।

'আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়া গেলে নতুন বাঁধ নির্মাণ করা হবে,' তিনি বলেন।

'কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি এখনো বিপৎসীমার ওপরে থাকায় কুড়িগ্রামে তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি নেই। তবে আগামি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে আসবে এবং বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে,' তিনি বলেন।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর গ্রামের বন্যাদুর্গত নারায়ণ চন্দ্র বর্মণ (৬০) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বাড়ি থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় তারা সোমবার সকালে বাড়িতে ফিরেছেন। আমন ধানের খেত থেকেও বন্যার পানি নেমে গেছে। আপাতত ফসলের তেমন ক্ষতি মনে হচ্ছে না।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে থাকায় লালমনিরহাটে তিস্তাপাড়ে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আপাতত তিস্তার পানি বৃদ্ধির কোন আশঙ্কা নেই।

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

5h ago