‘টু ফিঙ্গার টেস্ট’ মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন: পূর্ণাঙ্গ রায়ে হাইকোর্ট

supreme-court-1.jpg
সুপ্রিম কোর্ট ভবন। স্টার ফাইল ছবি

ধর্ষণ প্রমাণে নারীর শারীরিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে 'ভার্জিনিটি টেস্ট' বা 'টু-ফিঙ্গার টেস্ট' নিষিদ্ধ সংক্রান্ত হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ রায়ে হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে বলেছেন 'টু ফিঙ্গার টেস্ট' অবৈজ্ঞানিক, অনির্ভরযোগ্য এবং অবৈধ। এটি ভিকটিমের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন।

ধর্ষণের ভিকটিমদের পরীক্ষার সময় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা প্রোটোকল কঠোরভাবে অনুসরণ করতে আদালত সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর এবং বিচারপতি এ কে এম শহীদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চের ৬২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ/চিকিৎসক ভিকটিমকে পরীক্ষা করার সময় এবং তদন্ত কর্মকর্তারা ধর্ষণের মামলার তদন্ত করার সময় ভিকটিমের পূর্ববর্তী যৌন অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন করবেন না এবং মেডিকেল রিপোর্টে 'যৌন সম্পর্কে অভ্যস্ত'— এ ধরনের অবমাননাকর শব্দ মতামত দেওয়া যাবে না।

টু ফিঙ্গার টেস্টের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে ছয়টি মানবাধিকার সংস্থা এবং দুজন চিকিৎসক রিট আবেদন করেন। শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল হাইকোর্ট টু ফিঙ্গার টেস্ট নিষিদ্ধ করার রায় দেন।

রিট আবেদনকারীরা হলেন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসকে), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, ব্র্যাক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, নারীপক্ষ, ডা. রুচিরা তাবাসসুম নাভেদ এবং ডা. মোবারক হোসেন খান।

রিট আবেদনে তারা বলেন, ধর্ষণের ক্ষেত্রে টু ফিঙ্গার টেস্টের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এটা অপমানজনক, অবমাননাকর এবং নারীদের মর্যাদার মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। এই পরীক্ষা অসম্মানজনক প্রকৃতির হওয়ায় অনেক নারী এই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে অস্বীকার করেছেন এবং তারা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

হাইকোর্ট আরও বলেছেন, ধর্ষণের পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ মতামতের জন্য ভিকটিমকে অবশ্যই একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠাতে হবে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Elections entirely Bangladesh's internal matter: Shafiqul

'Wounds caused by crimes against humanity perpetrated by AL still fresh,' says CA's press secretary

1h ago