আ. লীগ ক্ষমতায় না থাকলে দেশ আবার অন্ধকার যুগে ফিরে যাবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, তার দল ক্ষমতায় না থাকলে বাংলাদেশ অন্ধকার যুগে নিমজ্জিত হবে।

তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে দেশ আবার অন্ধকার যুগে ফিরে যাবে। তবে আমি জানি, বাংলাদেশের মানুষ আর অন্ধকারে ফিরে যেতে চাইবে না।'

বুধবার ওয়াশিংটন ডিসির হলিডে একপ্রেস ইন হোটেলে আওয়ামী লীগের যুক্তরাষ্ট্র শাখার পক্ষ থেকে তাকে দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

বিএনপি-জামায়াত সরকারের ২৯ বছরকে অন্ধকারের যুগ হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের শাসনামলে নিজেদের ভাগ্য গড়তে অনেকে ব্যস্ত থাকায় তারা জনগণের জন্য কিছুই করেনি।

তিনি বলেন, 'বিএনপি-জামায়াত চক্র বাংলাদেশের মানুষের জীবন থেকে ২৯ বছর মুছে দিয়েছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত দেশব্যাপী ব্যাপক উন্নয়ন করে অনেক বছরের ঘাটতি পূরণ করেছে।'

তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে তুলে ধরা তার সরকারের রূপকল্প-২০৪১ অনুযায়ী ২০০৯ সাল থেকে দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও স্থিতিশীলতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে দেশ পরিচালনা করায় বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ২০২৬ সাল থেকে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং যার জন্য তারা উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে যাত্রাকে মসৃণ করার উপায় খুঁজে বের করতে তার মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছে।

তিনি বলেন, আমি জানি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের যাত্রায় কোনো জটিলতা হবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, আগামী সাধারণ নির্বাচন এ কারণে বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আগামী সাধারণ নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের অংশ হিসেবে তারা ইতোমধ্যে নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নে একটি কমিটি গঠন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশের জনগণের ওপর আমার বিশ্বাস ও আস্থা রয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ এখনো বিশ্বাস করে যে, আওয়ামী লীগই পারে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে এবং দেশের উন্নয়নকে টেকসই করতে।'

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তার বাবা, মা, ভাইসহ সবকিছু হারানোয় দেশের জনগণ তার কাছের মানুষ ও প্রিয়জন।

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের জনগণ আমার শক্তি। দেশবাসী আমার পরিবার এবং আমি এটা মাথায় রেখে রাষ্ট্র পরিচালনা করছি।'

সরকার প্রধান বলেন, তারা ভূমিহীন ও গৃহহীনদের বিনামূল্যে বাড়ি দিচ্ছেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছেন, আড়াই কোটি শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দিচ্ছেন যাতে দেশবাসী আর কষ্ট না পান।

তিনি বলেন, 'দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করতে আমরা পরিকল্পিতভাবে সবকিছু করে যাচ্ছি।'

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেশের মানুষের কেউ গৃহহীন ও অতি দরিদ্র থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছেন এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছেন এবং এখন উন্নয়নের পথে যাত্রা অব্যাহত রাখায় দেশকে একটি 'স্মার্ট বাংলাদেশে' রূপান্তরিত করার চেষ্টা করছি।

তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, 'সতর্ক থাকুন, কারণ, দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে যাতে কেউ আর ছিনিমিনি খেলতে না পারে।'

বিএনপি-জামায়াতকে সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বিশ্ব অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের চরিত্রের কোন পরিবর্তন হয়নি।

তিনি বলেন, 'তাদের (বিএনপি-জামায়াত চক্র) চরিত্রের এখনো পরিবর্তন হয়নি। তাই, তারা ষড়যন্ত্র করে এবং অপপ্রচারের মাধ্যমে দেশকে ধ্বংস করতে নেমেছে।'

শেখ হাসিনা আরো বলেন, 'দেশে-বিদেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ দেখিয়ে দিয়ে আমাদেরকে তাদের উচিত শিক্ষা দিতে হবে।' প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের যুক্তরাষ্ট্র শাখার নেতা-কর্মীদের আমেরিকায় তাদের এলাকার কংগ্রেসম্যান, সিনেট সদস্য এবং স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করতে এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াত চক্রের বাংলাদেশকে ধ্বংসের মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র সম্পর্কে অবহিত করার আহ্বান জানান।

আওয়ামী সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, তার দল জন্মলগ্ন থেকেই জনগণের অধিকারের জন্য সংগ্রাম শুরু করে। এসব সংগ্রামের মধ্যে রয়েছে ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা দাবি ও মুক্তিযুদ্ধ।

তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার কারণেই বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। এতো নিষ্ঠা ও ভালোবাসা নিয়ে দেশের উন্নয়নে আর কেউ কাজ করবে না। আমরা চাই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক এবং এক্ষেত্রে কেউ যেন বাধা সৃষ্টি করতে না পারে।'

প্রধানমন্ত্রী ১৭ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনের এর ফাঁকে অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগদানের পর নিউইয়র্ক থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসি পৌঁছেন।

Comments

The Daily Star  | English
Iran state TV live broadcast resumes after Israeli attack

Iran condemns Israeli attack on state TV as 'war crime'

The blast occurred as the presenter was live on TV lambasting Israel

1h ago