খুলনায় জমে উঠেছে পূজার কেনাকাটা

দুর্গাপূজা উপলক্ষে খুলনার বিপণি বিতানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়। ছবি: স্টার

দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে খুলনার বিপণি বিতানগুলোতে এখন চলছে শেষ সময়ের ব্যস্ততা। আগামীকাল থেকে শুরু হয়ে আগামী মঙ্গলবার বিজয়া দশমী পর্যন্ত চলবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, পূজার কেনাকেটা মহাঅষ্টমীর মধ্যেই শেষ হয়ে যায়।

খুলনায় শেষ সময়ে শাড়ির বাজারগুলোতে ভিড় করছেন নারীরা। বেচাকেনা চলছে অন্যান্য পোশাকের বাজারেও। বিক্রেতারা বলছেন, মহালয়ার পর থেকেই পূজার কেনাকাটা চলছে। গত বছরের তুলনায় এবার বিক্রি ভালো হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ক্রেতারাও স্বচ্ছন্দে নিজেদের পছন্দমতো পণ্য কিনতে পারছেন।

পূজা উপলক্ষে কেনাকাটায় বিশেষ ছাড় দিচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। পণ্যে বৈচিত্র্য এনেছে ফ্যাশন হাউজগুলো। খুলনার শিববাড়ি মোড়ে বিভিন্ন ব্রান্ডের শোরুমে ২০% থেকে ৬০% পর্যন্ত ডিসকাউন্ট দিচ্ছে।

নারীদের পোশাকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে সালোয়ার কামিজ, জামদানি শাড়ি, রাজশাহী সিল্ক, বলাকা সিল্ক, কাতান শাড়ি, লেহেঙ্গা ও তাঁতের শাড়ি। ছেলেদের জন্য রয়েছে বাহারি ডিজাইনের ধুতি, শর্ট পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, প্যান্ট। স্বল্প আয়ের মানুষ কেনাকাটা করছেন ফুটপাতের অস্থায়ী দোকানগুলো থেকে।

খুলনার শিববাড়ি মোড়, নিউমার্কেট, ডাকবাংলা মোড়, পিকচার প্যালেস, বড়বাজার, জলিল সুপার মার্কেট রেলওয়ে মার্কেট, নিক্সন মার্কেট, খালিশপুর চিত্রালী বাজার ঘুরে পূজা উপলক্ষে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়। বিশেষ করে দুপুরের পর থেকে মার্কেটগুলোতে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আশেপাশের জেলাগুলো থেকেও ক্রেতারা খুলনায় কেনাকাটা করতে আসছেন।

উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে খুলনার বড় বাজারের হকার্স মার্কেটের প্রসাধনীর দোকানগুলোতে। পূজা উপলক্ষে দর্জির দোকানগুলোতেও ব্যাপক ক্রেতা সমাগম হচ্ছে।

গত দুইদিন খুলনা শপিং কমপ্লেক্স গিয়ে দেখা যায়, শিশুদের পোশাকের দোকানগুলোতে ক্রেতারা ভিড় জমিয়েছেন। আবার কেউ কিনছেন শাড়ি, কেউ পাঞ্জাবি, কেউ আবার কিনছেন জুতা। প্রায় সবার হাতেই ছিল শপিং ব্যাগ। প্রতিটি দোকানেই ছিল ক্রেতা।

খুলনার দৌলতপুর থেকে সমৃদ্ধি স্বস্তি দাস তার মায়ের সঙ্গে কেনাকাটা করতে এসেছেন। শিববাড়ি মোড়ের বিভিন্ন দোকানে ঘুরে ঘুরে নিজের এবং পরিবারের সবার জন্য শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, প্যান্ট ও শার্ট কিনছেন।

তিনি বলেন, 'বাবার জন্য জামা প্যান্ট কিনেছি ২৩০০ টাকায়। দাদুর জন্য ৮০০ টাকায় ফতুয়া কিনেছি। আগেই ঠাকুমার জন্য এবং ছোট বোনের জন্য প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকার কেনাকাটা করা হয়েছে। মায়ের জন্য বড়বাজার থেকে শাড়ি কিনেছি দুটি। তবে গত বছরের তুলনায় দাম একটু বেশিই মনে হয়েছে।'

খুলনার বয়রা এলাকার দাশপাড়ার বাসিন্দা পলাশ দাশ নগরীর বড় বাজারে কেনাকাটা করতে এসেছেন চার বছরের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, গতকাল প্রায় সাত হাজার টাকার বিভিন্ন রকমের পোশাক কিনে গ্রামের বাড়ি পাইকগাছার রাড়ুলিতে পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছি। আর এখানে আমার স্ত্রীর জন্য ২২০০ টাকার একটি কাতান শাড়ি কিনেছি। ছেলের জন্য প্যান্ট এবং শার্ট কিনেছি ১৮০০ টাকা দিয়ে এবং বছরের মেয়ের জন্য একটি হাতা কাটা জামা কিনেছি ৮০০ টাকা দিয়ে।

খুলনা নিক্সন মার্কেটের দোকানমালিক ওবায়দুল রহমান বলেন, গত কয়েকদিন দিন যাবত ভালোই বেচাকেনা হচ্ছে। আমাদের এই মার্কেটটা মূলত মধ্যবিত্তদের জন্য। তাই বিভিন্ন উপজেলা থেকে ক্রেতারা আমাদের এখানে আসেন। পূজা উপলক্ষে সপ্তাহের সাতদিনই মার্কেট খোলা রাখা হচ্ছে।

তিনি জানান, প্রতিদিন তার দোকান থেকে প্রায় ২০০ জিন্স বিক্রি হচ্ছে।

খুলনার বড়বাজারের হকার্স মার্কেটসহ বিভিন্ন গয়নার দোকানেও ক্রেতাদের ভিড় লেগে থাকছে।

নারীরা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কিনছেন চুড়ি, গলার হার, আংটিসহ নানা রকম অলঙ্কার। পোশাকের পাশাপাশি মেয়েদের জুয়েলারি, সিঁদুর, চুড়িসহ অন্যান্য অনুষঙ্গ বেশ ভালোই বিক্রি হচ্ছে বলে জানালেন দোকানিরা।

Comments

The Daily Star  | English

Govt decides to ban AL until completion of ICT trial

Law Adviser Prof Asif Nazrul said this at a press briefing after a special meeting of the advisory council tonight

55m ago