বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আসার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই: বাণিজ্য সচিব

‘আমাদের অংশীজনদের বলেছি, আমরা অনেকগুলো জায়গা সংস্কার নিয়ে এসেছি তাদের চাওয়া মতো।’
বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আসার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই: বাণিজ্য সচিব
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আসার মতো কোনো পরিস্থিতি নেই জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ।

আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

বাণিজ্য সচিব বলেন, 'আমাদের যারা বাণিজ্য অংশীদার, বড় অংশীদার; ইউরোপীয় ইউনিয়নে ২৫ বিলিয়ন ডলারের আমরা রপ্তানি করি, সেটা শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১০ বিলিয়ন রপ্তানি করি, সেখানে আমরা কোনো শুল্কমুক্ত সুবিধা পাই না। পৃথিবীর মধ্যে বলা যায় যে, অনেক বেশি শুল্ক দিয়ে বাংলাদেশকে রপ্তানি করতে হয়।'

তিনি বলেন, 'তাদের কিছু দাবি আছে যে, আমাদের শ্রম আইনে একটা মিনিমাম থ্রেশোল্ড আছে, যেটা ২০ ভাগ ছিল। একটি কারখানার ২০ শতাংশ শ্রমিক যদি সংগঠন করতে চায়, তারা করতে পারবে। তার নিচে হলে পারবে না। তাদের দাবি ছিল ১০ শতাংশ করতে হবে। এটাকে আমরা ১৫ শতাংশ করেছি। আরেকটা দাবি হচ্ছে, বেপজা আইনে এখানে সংগঠন করার অধিকার আছে। ফ্রিডম অব এক্সপ্রেসনের সুযোগ আছে কিন্তু আমরা ট্রেড ইউনিয়ন বলি না। আইনে বলা আছে, ওয়ার্কার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন; জিনিসটা প্রায় একই। এখনো সংগঠন হচ্ছে, তখনো সংগঠন হবে। নামটা যেন ট্রেড ইউনিয়ন হয়।

'এটা নিয়ে আমাদের রোডম্যাপে পরিকল্পনা আছে। ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে বেপজা লেবার অ্যাক্ট সংশোধন করা হবে। সংশোধন করে কীভাবে হবে সেটা সব অংশীজন আলোচনা করে ঠিক করবেন,' বলেন তিনি।

আপনারা মনে করছেন কি না যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে এবং এটা নিয়ে আপনারা বা ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন কি না জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি কিন্তু নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মেমোরেন্ডামে চাচ্ছে শ্রম পরিস্থিতির আরও উন্নতি হোক—সব দেশে, এটা কিন্তু শুধু বাংলাদেশকে টার্গেট করে না। সেটা আমরা আমলে নিয়েছি।'

ব্যাপারটি চলমান আলোচনার অংশ জানিয়ে তিনি বলেন, 'ত্রি প্লাস ফাইভ অর্থাৎ পাঁচ জন রাষ্ট্রদূত ও তিন জন সচিব মিলে যে একটা প্ল্যাটফর্ম আছে, সেই বৈঠকটা এ মাসে করার কথা। সে জন্যই মূলত আজকে বসেছিলাম যে, আমাদের এতকাল যে অগ্রগতি হলো, সেটা কীভাবে জানানো যায়।

'স্টক টেকিং। তার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মেমোরেন্ডাম আলোচনা হয়েছে। সেটা আমাদের অংশীজনদের বলেছি, আমরা অনেকগুলো জায়গা সংস্কার নিয়ে এসেছি তাদের চাওয়া মতো। আরও কী করা যায় আগামী দিনে। ২০২১ থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত এ পাঁচ বছর আমাদের জাতীয় কর্মপরিকল্পনার মেয়াদ। সে ক্ষেত্রে কিছু বাস্তবায়িত হয়েছে, কিছু বাস্তবায়ন হয়নি, হবে আগামী দুই বছরে,' বলেন তিনি।

সংশোধনী কীভাবে সুপারিশ করা হবে জানতে চাইলে তপন বলেন, 'অংশীজন; এখানে বিদেশি বিনিয়োগকারী আছে, শ্রমিক কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধি আছে, সরকার আছে, সবাই মিলেই সিদ্ধান্ত নেবে কোন ফরম্যাটে যাবে। ইতোমধ্যে বেপজা (বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ) আইনে অনেকগুলো সংস্কার আনা হয়েছে। এটার ব্যাপারেও সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেবেন।'

তিনি বলেন, 'আমি বলেছি, আমেরিকানদের দাবি এটাকে ট্রেড ইউনিয়ন করতে হবে।'

মার্কিন দূতাবাসকে এই বিষয়গুলো লিখিতভাবে জানানো হবে কি না জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব বলেন, 'তাদের চাওয়া যে পূরণ হয়েছে, যেমন বেজা (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ) আইনে সংস্কার করা হয়েছে। শ্রম আইনটা বেজার মধ্যে প্রযোজ্য হবে। বাংলাদেশ লেবার অ্যাক্টে যে সংস্কার করা হয়েছে; আগে থ্রেশোল্ড ছিল ২০ শতাংশ, এখন ১৫ শতাংশে নামিয়ে নেওয়া হয়েছে। এই অগ্রগতি যে হয়েছে, এই জিনিসটা আমরা তাদের জানাবো।'

এই প্রক্রিয়ায় কয়েক দিন সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Post-August 5 politics: BNP, Jamaat drifting apart

The taunts and barbs leave little room for doubt that the 33-year-old ties have soured. Since the fall of Sheikh Hasina’s government on August 5, BNP and Jamaat-e-Islami leaders have differed in private and in public on various issues, including reforms and election timeframe.

7h ago