গ্রামবাসীর প্রচেষ্টায় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেলো খুলনাগামী সীমান্ত এক্সপ্রেস
নীলফামারীতে দুষ্কৃতিকারীরা চিলাহাটি-পার্বতীপুর রেললাইনের ফিস প্লেটের ৩২টি ক্লিপ খুলে ফেলায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে পরে খুলনাগামী ট্রেন সীমান্ত এক্সপ্রেস। তবে, গ্রামবাসীর সতর্কতা ও প্রচেষ্টায় রক্ষা পেয়েছে ট্রেন ও ট্রেনের যাত্রীরা।
গতকাল বুধবার রাত পৌনে ১০টার দিকে জেলার ডোমার উপজেলার বোরাগাড়ী ইউনিয়নের বাগডোকরা প্রধানপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বোরাগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম রিমূন বলেন, 'রাত পৌনে ১০টার দিকে একদল দুষ্কৃতিকারী রেললাইনের ফিস প্লেটের ক্লিপ খুলে ফেলছিল। সে সময় আশেপাশের কিছু গ্রামবাসী রেললাইনের দিক থেকে শব্দ শুনতে পায়। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান যে কয়েকজন মিলে রেললাইনের ক্লিপগুলো যন্ত্র দিয়ে খুলছে।'
তিনি বলেন, 'উপস্থিত গ্রামবাসী চিৎকার করে অন্যদের ডাকতে থাকলে অপরাধীরা তাদের মালামালসহ একটি বস্তা ফেলে দ্রুত পালিয়ে যায়। ফলে তাদের ধাওয়া করা হলেও আর আটক করা সম্ভব হয়নি।'
স্থানীয়রা জানান, উদ্ধারকৃত সেই বস্তার ভেতরে ৩২টি ফিস প্লেটের ক্লিপ পাওয়া গেছে। এগুলো রেললাইনের প্রায় আধা কিলোমিটার অংশ থেকে খুলে নেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনার কিছু সময় পরেই উপস্থিত প্রায় ৩০০ গ্রামবাসী দেখতে পান যে ক্ষতিগ্রস্ত ওই রেললাইনে ট্রেন আসছে। তারা সবাই মিলে ট্রেনটি থামাতে চিৎকার করতে থাকেন। বাড়িতে ব্যবহৃত বাতি, কুপি ও টর্চলাইট জ্বলিয়ে এবং লাল কাপড় ধরে তারা গার্ড ও লোকোমাস্টারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন।
ট্রেনটির গার্ড হাফিজুর রহমান বলেন, 'ট্রেনটি থামানোর জন্য গ্রামবাসীর অবিরাম চেষ্টা আমাদের নজরে আসে। আমরা ট্রেন থামাই এবং তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি।'
তিনি স্বস্তির সঙ্গে বলেন, 'গ্রামবাসীদের চেষ্টায় ট্রেনটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে। তাৎক্ষনিকভাবে আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই। অল্প সময়ের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করা হলে আমরা ট্রেনটি নিয়ে এগিয়ে যাই।'
রেলওয়ে পশ্চিম জোনের রেল পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ বলেন, 'রেললাইনের ৩২টি ক্লিপ খুলে ফেলার ঘটনাটি আমরা তদন্ত করছি। এটা নাশকতা চেষ্টা নাকি চুরির ঘটনা, তা নিশ্চিত করে এখনই বলা যাচ্ছে না। নিশ্চিত হলে সেই অনুযায়ী আমার মামলা করবো।'
Comments