নির্বাচনের পর বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা আরও বিস্তৃত হবে: চীনা রাষ্ট্রদূত

চীনা রাষ্ট্রদূত
সেন্টার ফর অল্টারনেটিভস (সিএ) আয়োজিত 'বাংলাদেশে চীনের জাতীয় চিত্র' শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নয়ন কৌশল আরও সংহত এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাস্তবিক সহযোগিতা গভীর করতে চায় চীন। একই সঙ্গে বাংলাদেশ-চীন কৌশলগত অংশীদারত্বকে নতুন মাত্রায় নিয়ে আসতে প্রস্তুত।

তিনি বলেন, চীন উভয় দেশের জনগণকে আরও বেশি সুবিধা দিতে আগ্রহী।

তিনি বলেন, 'আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাস্তবিক সহযোগিতা আরও বিস্তৃত পরিসরে বিকশিত হবে।'

রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, দ্বিপক্ষীয় পর্যায়ের বাইরে বাংলাদেশ-চীন সহযোগিতা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও প্রসারিত হবে এবং সমগ্র মানবজাতির স্বার্থে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন বজায় রাখতে বৃহত্তর ভূমিকা পালন করবে।

তিনি বলেন, 'সুতরাং এখানে উপস্থিত আপনারা সবাইসহ দুই দেশের সর্বস্তরের জনগণকে চীন ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে লালন, যত্ন ও রূপ দানের আহ্বান জানাচ্ছি এবং দুই দেশের থিংক ট্যাংক ও পণ্ডিতরা অনন্য ও অপূরণীয় ভূমিকা পালন করতে পারেন।'

বাংলাদেশে চীন দূতাবাসের সহযোগিতায় সেন্টার ফর অল্টারনেটিভস (সিএ) 'বাংলাদেশে চীনের জাতীয় চিত্র' শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও সেন্টার ফর অল্টারনেটিভসের (সিএ) নির্বাহী পরিচালক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।

সেমিনারে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি এসআইপিজি প্রোগ্রামের পরিচালক অধ্যাপক ড. এস কে তৌফিক এম হক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শাহাব এনাম খান বক্তব্য দেন।

শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. আমেনা মহসিন।

ড. ইমতিয়াজ বাংলাদেশিদের মধ্যে চীনের জাতীয় ভাবমূর্তি, বিশেষ করে তাদের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, উন্নয়নমূলক ও ভৌগোলিক পার্থক্য তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নিয়ে তরুণরা কী ভাবছে, সে দিকেই ছিল মূল ফোকাস।

ড. তৌফিক হক বাংলাদেশ সম্পর্কে চীন সরকারের যে দুটি বিষয় বিবেচনা করা দরকার তা তুলে ধরেন। প্রথমত, চীনকে পরিষ্কার করতে হবে যে, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তার পদ্ধতি অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোর থেকে ভিন্ন। দ্বিতীয়ত, চীনের উচিত ঋণের ফাঁদ আখ্যানের বিরুদ্ধে পাল্টা আখ্যান তৈরি করা, কারণ বাংলাদেশিরা এখনও এই আখ্যান সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করে।

ড. শাহাব এনাম খান বলেন, 'ভারসাম্য রক্ষার কাজ' বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার সম্পর্ককে সবচেয়ে ভালোভাবে বর্ণনা করে। সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, ব্যর্থ ঐতিহ্যবাহী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এবং জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অবশ্যই চীন ও অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক নিশ্চিত করতে হবে।

রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, 'আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, বিশেষ করে দেশ জানা, আঞ্চলিক সহযোগিতা ও ভূ-রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে গভীর গবেষণা জোরদার করতে এবং মূল্যবান পরামর্শ দেওয়ার জন্য আমরা চীন ও বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যক্তিদের স্বাগত জানাই এবং সমর্থন করি।'

তিনি বলেন, আশা করা যায়, দুই দেশের নীতি নির্ধারকরা চীন-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতার দিকে নিবিড় মনোযোগ দেবে। দুই দেশ যে সব নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে তা মোকাবিলার উপায় নিয়ে চিন্তা করবে। নতুন পরিস্থিতিতে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের উন্নতির জন্য সৃজনশীল পরামর্শ প্রস্তাব করবে।

ইয়াও বলেন, প্রতিবেদন এবং আপেক্ষিক তথ্য বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে চীন সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা দেখায়, পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ক্ষেত্র চিহ্নিত করে যেখানে চীন ভবিষ্যতে তার ভাবমূর্তি উন্নত করতে আরও মনোনিবেশ করতে পারে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক করিম, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, ড. জায়েদী সাত্তার, অধ্যাপক ড. বরকত-ই-খোদা প্রমুখ সেমিনারে অংশ নেন।

Comments

The Daily Star  | English
remittance earning of Bangladesh

Remittance jumps 32% in May

Migrants sent home $2.97 billion last month

40m ago