ড. ইউনূসের সাজার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে ১৪ নাগরিকের বিবৃতি

শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কারাদণ্ডাদেশ ও জরিমানার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১৪ বিশিষ্ট নাগরিক।
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কারাদণ্ডাদেশ ও জরিমানার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১৪ বিশিষ্ট নাগরিক।

আজ শুক্রবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তারা বলেন, ড. ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের তার তিন সহকর্মীর সাম্প্রতিক সাজার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য ফৌজদারি বিচারে তাদের ছয় মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, গ্রামীণ টেলিকমের প্রধান হিসেবে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে ওই মামলা করা হয়। অপর তিন আসামি হলেন প্রতিষ্ঠানটির দুই বোর্ড সদস্য ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। চুক্তিভিত্তিক কর্মী ও কর্মীদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়টিকে ফৌজদারি অপরাধ গণ্য করায় তাদের কারাদণ্ড হয়েছে। দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করে সাজা দেওয়া হয়েছে। যেখানে সাভারের রানা প্লাজা ধসের মতো ঘটনার শিকার ব্যক্তিরা ন্যায়বিচারের জন্য এখনো অপেক্ষা করছেন, সেখানে ড. ইউনূসের ক্ষেত্রে অবিশ্বাস্য তাড়াহুড়া করে আইনি প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ড. ইউনূস গ্রামীণ টেলিকম বোর্ডের নির্বাহী প্রধান নন, দৈনন্দিন কর্মপরিচালনায় তিনি সরাসরি যুক্তও নন। তাই এটাই উপলব্ধি হয় যে হয়রানির জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে; যা বাংলাদেশে নাগরিক অধিকার সংকুচিত হয়ে যাওয়ার মতো নেতিবাচক বার্তা দেবে এবং প্রতিকার পাওয়ার শেষ ভরসাস্থল বিচার বিভাগের ওপর মানুষের আস্থাকে দুর্বল করবে।

আইন নিজস্ব গতিতে চলা উচিত উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা দেশের নাগরিক হিসেবে সংশ্লিষ্ট সবাইকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত না হয়ে বস্তুনিষ্ঠ, স্বচ্ছ ও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করার আহ্বান জানাই। পাশাপাশি আইনকে পক্ষপাতদুষ্টভাবে ব্যবহার করে ড. ইউনূসকে হয়রানি বন্ধ করতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই।

বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেন, নাগরিক অধিকার সুরক্ষার গুরুত্বকে স্বীকার করে নিয়ে এবং নাগরিক সমাজ ও নেতাদের বিরুদ্ধে সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমৃদ্ধির যাত্রাকে এগিয়ে নিতে আমরা সবার প্রতি আহ্বান জানাই।

বিবৃতিদাতারা হলেন, মানবাধিকার কর্মী হামিদা হোসেন, অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান, মানবাধিকার কর্মী রাশেদা কে চৌধুরী, খুশী কবির, শিরিন হক, আইনজীবী জেড আই খান পান্না, শাহদীন মালিক, মানবাধিকার কর্মী শাহীন আনাম, শামসুল হুদা, আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মানবাধিকার কর্মী খায়রুল ইসলাম, শিক্ষাবিদ শাহনাজ হুদা, মানবাধিকার কর্মী ফারুখ ফয়সাল ও সাঈদ আহমেদ।

Comments