ট্রাক দুর্ঘটনা, ৭২ হাজার টাকায় রফা

বুধবার ভোরে রাজশাহী শহরের উপকণ্ঠে শ্যামপুর এলাকায় একটি বেপরোয়া বালুবোঝাই ডাম্প-ট্রাক দুটি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে দেয়। এই ট্রাকটি পরে দুটি বাড়ি এবং দুটি দোকানে ঢুকে পড়ে।
রাজশাহীর শ্যামপুরে দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক। ছবি: সংগৃহীত

বুধবার ভোরে রাজশাহী শহরের উপকণ্ঠে শ্যামপুর এলাকায় একটি বেপরোয়া বালুবোঝাই ডাম্প-ট্রাক দুটি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে দেয়। এই ট্রাকটি পরে দুটি বাড়ি এবং দুটি দোকানে ঢুকে পড়ে।

এ ঘটনায় ট্রাকচালক মাহবুবুল ইসলাম আহত হন। দুমড়ে যায় ট্রাকটির সামনের অংশ। বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়ায় সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন থাকে বলে পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে।

কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় কাটাখালী থানায় সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

ট্রাক মালিক ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে ৭২ হাজার টাকায় সমঝোতা করেছেন বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, 'ক্ষতিগ্রস্তরা ট্রাকমালিকের সঙ্গে সমঝোতা হওয়ার কথা জানিয়ে আমাদের ট্রাকটি জব্দ না করার অনুরোধ জানান। কিন্তু নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) সম্পদের ক্ষতি হওয়ায় আমরা ট্রাকটি থানায় নিয়ে যাই।'

ওসি বলেন, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ডাম্প-ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে বাড়ি ও দোকানে ঢুকে পড়ে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একজন লিডার খায়রুল ইসলাম জানান, ট্রাকচালকের কপাল ও ডান হাতে আঘাত লেগেছে। ট্রাকচালক কেবিনের ভিতরে আটকা পড়েছিলেন। দুর্ঘটনার পর তার হেলপার পালিয়ে যান।

ক্ষতিগ্রস্তদের একজন রাজিবুল বাশার জানান, দুর্ঘটনার পর ওই এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই রিপোর্ট লেখার সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়নি বলে জানান তিনি।

ভুক্তভোগীরা জানান, শ্যামপুর এলাকার আওয়ামী লীগ কর্মী জনি ইসলামের মাধ্যমে রাজিবুল বাশার ও কেয়ারুল ইসলাম, আনারুল ইসলাম ও মোমিন ৭২ হাজার টাকায় ক্ষতিপূরণ আদায় করে দেওয়ার শর্তে এ দুর্ঘটনায় কোনো মামলা করছেন না।

জনি ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'ট্রাক মালিক ও ক্ষতিগ্রস্তদের সমঝোতায় আমি মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছি। আইনি প্রক্রিয়ায় বিষয়টি সুরাহা হতে অনেক সময় লাগত। আমরা নেসকোকেও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। বৃহস্পতিবার নেসকোর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে রফা হওয়ার কথা রয়েছে।'

ওসি বলেন, ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ দেবে না বলে জানিয়েছে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত নেসকোর পক্ষ থেকেও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। নেসকো অভিযোগ না দিলে জব্দ করা ট্রাকটি এর মালিকের কাছে ফেরত দেওয়া হবে।

নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নেকামুল ইসলাম সমঝোতার চেষ্টার কথা অস্বীকার করেছেন।

তিনি বলেন, আমরা নিয়ম অনুযায়ী সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করব। ক্ষতিগ্রস্ত বৈদ্যুতিক খুঁটি মেরামতের কাজে বিদ্যুৎ সরবরাহে কিছুটা বিঘ্ন ঘটেছে।

Comments