‘ভোক্তারা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন’

‘অনেক অসাধু ব্যবসায়ী সয়াবিন তেলের কথা বলে ভোক্তাদের কাছে পাম অয়েল বিক্রি করেন।’
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। ছবি: স্টার

পবিত্র রমজানকে সামনে রেখে অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা না করতে পারে, সে ব্যাপারে ভোক্তাদের সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

আজ রোববার জেলার ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া এলাকার একটি রিসোর্টে আয়োজিত 'খাদ্যপণ্যের নিরাপত্তা ও পুষ্টিমান নিশ্চিতকরণে সচেতনতা বৃদ্ধি' বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এই আহ্বান জানান।

জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন অধিদপ্তরের পরিচালক ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, জিএআইএনের পোর্টফোলিও লিড ড. আশেক মাহফুজ, শিবালয় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফা নাজনীন, ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুর রহমান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাসিব আহসান, অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আতিয়া সুলতানা, সহকারী পরিচালক জান্নাতুল ফেরদৌস ও আসাদুজ্জামান রুমেল, জিএআইএনের সমন্বয়কারী লাইলুন নাহার প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, 'খোলা ভোজ্যতেলে সাধারণত ভিটামিন এ থাকে না। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী সয়াবিন তেলের কথা বলে ভোক্তাদের কাছে পাম অয়েল বিক্রি করেন। এতে ভোক্তারা প্রতারিত হচ্ছেন। এটি স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি। খোলা ড্রামের তেল বিক্রি বন্ধে এবং আসন্ন রমজান উপলক্ষে নিত্যপণ্যের যৌক্তিকমূল্যের অধিক মূল্যে বিক্রি বন্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং সহযোগিতা করতে হবে।'

তিনি বলেন, 'ফার্মেসিগুলোতে ফার্মাসিস্ট থাকেন না। ফার্মেসিতে যে সার্টিফিকেট (লাইসেন্স) রয়েছে, তা স্থানীয় ওষুধ বিক্রেতা সমিতি দিচ্ছে। কিন্তু ফার্মেসিগুলোতে ওষুধ প্রশাসনের লাইসেন্স লাগে। এ ছাড়া যিনি ফার্মাসিস্ট, তাকে ফার্মাসিস্ট কাউন্সিল থেকে সনদ দেওয়া হয়। এ বিষয়টি জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। এসব বিষয়েও সবাইকে সচেতন হতে হবে।'

'রমজানের কয়েকদিন আগে থেকেই ভোক্তারা এক মাসের কেনাকাটা করে থাকেন। তখন এসব পণ্যের অতিরিক্ত চাহিদার কারণে বাজারের ভারসাম্য নষ্ট হয়। আর এই সুযোগে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ভোক্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে ভোক্তারা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন।' ভোক্তাদের এসব পণ্য ধাপে ধাপে ক্রয় করার অনুরোধ করেন তিনি।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সংগঠন গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশন (জিএআইন) কর্তৃক আয়োজিত দিনব্যাপী এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, হোটেল মালিক ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধি।

এর আগে, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও জেলা প্রশাসক মানিকগঞ্জ জেলা শহরের বাজার তদারকি করেন। বাজার তদারকি শেষে তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, 'আমদানি পণ্যের ক্ষেত্রে ডলারের দাম বৃদ্ধি ও দেশীয় পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। এর মধ্যে আমদানি-নির্ভর পণ্যগুলো দেশে চলে এসেছে। তবে ব্যবস্থাপনায় একটি বড় ত্রুটি আছে। আমরা বাজার ব্যবস্থাপনা ও সাপ্লাই চেইন বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছি।'

Comments