ছুটি শেষে ফিরে শ্রমিকরা দেখেন কারখানা বন্ধের নোটিশ

কারখানার সামনে গিয়ে দেখা যায়, ছুটি শেষে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শ্রমিকরা হতাশ হয়ে বসে আছেন।
ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে হতাশ হয়ে বসে আছেন শ্রমিকরা (বামে), কারখানা বন্ধের নোটিশ (ডানে)। ছবি: সংগৃহীত

ঈদের ছুটি হলে তারা গ্রামের বাড়ি গেলেন, ঈদ শেষে বাড়তি ভাড়া দিয়ে কর্মস্থলে ফিরে দেখেন কারখানা বন্ধের নোটিশ।

শ্রমিকদের না জানিয়েই বন্ধের মধ্যে কারখানা লে-অফের নোটিশ দিয়েছে গাজীপুরের বড়বাড়ী এলাকায় ন্যাশনাল কেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ওই কারখানার সামনে গিয়ে দেখা যায়, ছুটি শেষে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শ্রমিকরা হতাশ হয়ে বসে আছেন।

রংপুর, কুড়িগ্রাম, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, বরগুনা, নোয়াখালী, নেত্রকোনা, শেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা শ্রমিকরা কারখানার সামনে বসে হতাশা প্রকাশ করে জানান, সকালে কারখানার গেটের সামনে এসে দেখেন  কারখানা বন্ধ, লে-অফ নোটিশ টাঙানো। মালিকপক্ষ তাদের এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।

ন্যাশনাল কেমিক্যালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএইচএম বুলুর সই করা নোটিশে লেখা আছে, মালিকের ব্যবসায়িক মন্দা, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি, কোম্পানির আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে কাঁচামাল আমদানি করতে ব্যর্থ হওয়ায় ও ধারাবাহিক ব্যবসায়িক লোকসান হওয়ায় লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে।

এতে আরও লেখা, 'যদি মালিকের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক  হয় এবং কাঁচামাল আমদানি সম্ভব হয় তাহলে আগামী ২৩ এপ্রিল কারখানা চালুর সম্ভাবনা আছে।'

শ্রমিকরা বলেন, 'আমাদের এগে কিছু জানায়নি। বাড়ি থেকে অনেক  কষ্ট করে গাড়ি ভাড়া দিয়ে কাজে এসেছি। ঈদ বলেই বেশি টাকা দিয়ে আসতে হয়েছে। যদি জানতাম কারখানায় বন্ধ, তাহলে তো এত কষ্ট করে  প্রচণ্ড গরমের মধ্যে আসতাম না। এখন আমরা বাসায় যাব, নাকি আবার গ্রামে যাব?'

ওই কারখানার শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি মাহফুজুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে কোনো ধরনের   যোগাযোগ করতে পারছি না।'

আরেক শ্রমিক নেতা জালাল হাওলাদার বলেন, 'এটা ঠিক হয়নি। লে-অফ ঘোষণায় শ্রমিকরা ছুটির টাকা পাবে না।'

এ বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার এবিএম সিদ্দিককে ফোন করা হলে তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এক সপ্তাহের জন্য কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে। এটা মালিকপক্ষের বিষয়। তারা কেন না জানিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিলেন আমি জানি না।'

বিষয়টি জানতে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক (অর্থ) আব্দুস সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, শ্রমিকদের ঈদের আগে জানানো হয়েছিল লে-অফের বিষয়টি। তিনি বলেন, 'ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-বোনাসসহ সব পাওনা পরিশোধ করে জানানো হয়েছিল লে-অফের কথা। ফ্যাক্টরি ইনচার্জকে জানানো হয়েছিল। শ্রমিকরা জেনেই বাড়িতে গেছে।'

এ প্রসঙ্গে কারখানার শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি মাহফুজুর রহমান বলেন, 'ঈদের আগে আমাদের ৯ তারিখ থেকে ৭ দিন ছুটি দিয়েছিল। আজ ১৬ তারিখ আমরা সবাই জানি কারখানা খোলা। অফিসে সকাল ৮টায় এসে দেখি লে-অফ নোটিশ। নোটিশে ছুটির ৭ দিনকে লে-অফ দেখানো হয়েছে, যেন সবাই ছুটির টাকা না পায়। পরে আবার দ্বিতীয় লে-অফ নোটিশ দিয়েছে।'

Comments