এমপি আনার খুন হয়েছেন, আমাদের দেশের মানুষই জড়িত: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ উপজেলা) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে ভারতে হত্যা করা হয়েছে এবং বাংলাদেশি কেউ তাকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
কলকাতায় এমপি আনারের মরদেহ উদ্ধারের পর আজ বুধবার নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'এমপি আনোয়ারুল আজিম কলকাতায় খুন হয়েছেন। কলকাতার এক বাসায় তাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। খুনের মোটিভ, কারা খুন করেছেন—এসব জানতে ভারতের পুলিশ কাজ করছে।'
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমাদের কাছে যেসব তথ্য আছে তা তদন্তের স্বার্থে আমরা এখনই প্রকাশ করছি না। তদন্ত শেষ হলে জানানো হবে তিনি কেন খুন হয়েছেন, কে কে খুন করেছে, কী ধরনের অস্ত্র দিয়ে খুন হয়েছেন।'
মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আরও বলেন, 'মরদেহ আমাদের হাতে আসেনি। দুই দেশের পুলিশ তদন্ত করছে। ভারতের পুলিশ আমাদের জানিয়েছে যে তিনি খুন হয়েছেন, এটা সুনিশ্চিত।'
এ ঘটনায় আটকদের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, 'তাদের জিজ্ঞাসাবাদ হচ্ছে। খুব পজিটিভ ওয়েতে তদন্ত চলছে। যারা এই খুনের সঙ্গে জড়িত, তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল আমরা পরে সেগুলো প্রকাশ করব।'
'তিন আসামি ধৃত অবস্থায় আছে' উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, 'আমরা আরও কয়েকজনকে ধরার প্রচেষ্টায় আছি। এটা একটা খুন। তাকে হত্যা করা হয়েছে। এখানে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল ধরবে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি, কারণ ভারতের কেউ এখানে জড়িত হন নাই। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, তাতে আমাদের দেশের মানুষই এর সঙ্গে জড়িত।'
গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য ব্যক্তিগত সফরে ভারতে যান তিনবারের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার। ১৭ মে থেকে তার পরিবার তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। ১৮ মে তার নিখোঁজের বিষয়ে উত্তর কলকাতার বরানগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন পারিবারিক বন্ধু গোপাল বিশ্বাস।
জিডিতে বলা হয়েছে, কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল ১২ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে কলকাতায় তার পারিবারিক বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে যান। পরদিন দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে তিনি ডাক্তার দেখানোর কথা বলে গোপাল বিশ্বাসের বাড়ি থেকে বের হন। সন্ধ্যায় তার বাড়ি ফেরার কথা ছিল। বিধান পার্কে কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে থেকে ট্যাক্সিতে উঠেছিলেন এমপি আনোয়ারুল।
সন্ধ্যায় তিনি হোয়াটসঅ্যাপে গোপালকে একটি মেসেজ পাঠান। এতে বলা হয়েছে, তিনি দিল্লি যাচ্ছেন এবং সেখানে পৌঁছে তাকে ফোন করবেন। গোপালকে ওই মেসেজে এমপি আনোয়ারুল আরও বলেছিলেন যে তাকে ফোন করার প্রয়োজন নেই।
গত ১৫ মে আনোয়ারুল আরেকটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে লেখেন, তিনি ভিআইপিদের সঙ্গে দিল্লি পৌঁছেছেন এবং তাকে যেন ফোন না করা হয়। একই মেসেজ এমপি আনোয়ারুল তার ব্যক্তিগত সহকারী রউফের কাছেও পাঠিয়েছেন
গত ১৭ মে গোপাল বিশ্বাসকে ফোন করে এমপির মেয়ে ডোরিন জানান, তিনি বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।
৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, এমপি আনোয়ারুল ২০০০ সাল থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে ২১টি মামলার আসামি ছিলেন। তবে বিভিন্ন সময়ে ওই সব মামলায় খালাস পেয়েছেন তিনি।
Comments