সাবেক অর্থমন্ত্রী কথা শুনতেন না, বোবা ছিলেন: চুন্নু

সাবেক অর্থমন্ত্রী কথা শুনতেন না, বোবা ছিলেন: চুন্নু
সংসদে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির একাংশের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছেন সংসদে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির একাংশের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।

আজ সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তৃতীয় অধিবেশন এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনে তিনি এই দাবি জানান।

অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে চুন্নু বলেন, 'আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একটি বড় কাজ হলো ব্যাংক বিভাগ তদারকি করা। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে। টাকা খরচ করেন, সমস্যা নেই। তবে জনগণের টাকা যে লুটপাট হচ্ছে এবং ব্যাংকগুলোতে যে অনিয়ম হচ্ছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আপনার আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক তদারকি করে, আপনি কি জবাব দিতে পারবেন কী তদারকি করে?'

তিনি আরও প্রশ্ন করেন, 'আপনি কি জবাব দিতে পারবেন পি কে হালদার সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা নিয়ে চলে গেল বিদেশে। জনতা ব্যাংক থেকে একজন কাস্টমার এক হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে চলে গেল।'

চুন্নু বলেন, 'বিভিন্ন সময় দেখা যায় যে, বড় বড় প্রতিষ্ঠান ঋণ নেওয়ার পরে সুদ মওকুফের দরখাস্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংকে। একটি প্রতিষ্ঠান দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা সুদ মওকুফ করিয়ে নিলো। একজন কৃষকের ৫০ হাজার টাকা ঋণের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়।

'বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, চারটি উপাদান আছে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ঋণের সুদ মওকুফ করার। একটি উপাদানও নেই এ রকম প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ কোটি টাকা; এক্সিম ব্যাংকের মালিকের প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ কোটি টাকা মওকুফ করে দেওয়া হয়েছে। এগুলো কী,' প্রশ্ন রাখেন তিনি।

চুন্নু বলেন, 'এ ধরনের কাজগুলো যদি তারা তদারকি করতে না পারে, নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে তাহলে জনগণের টাকা খরচ করে লাভটা কী! দরকারটা কী? তার চেয়ে বরং চুপচাপ থাকাই ভালো। ব্যাংক থেকে যার যা ইচ্ছা মতো নাও, যত পারো লুটপাট করো। ২০০৯ সালে যখন আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে তখন খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা। আজকে খেলাপি ঋণ বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী এক লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা।

'ঋণ খেলাপিকে ধরতে পারেন না, ঋণ নিয়ে বিদেশে চলে যাবে, পাচার হয়ে যাবে। ডলার সংকট কেন? খেলাপি ঋণ ওইসব রাঘব-বোয়াল যারা অবৈধভাবে টাকা আয় করে, তারাই আমাদের ডলারগুলো কিনে পাচার করে,' যোগ করেন তিনি।

অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে চুন্নু বলেন, 'আপনার জায়গায় যিনি ছিলেন (সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল) কথাই শোনেন না। উনি কথা শুনতেন না, বোবা ছিলেন। অন্তত আপনার কাছে অনুরোধ করব, এ সমস্ত অনিয়মগুলো বন্ধ করেন। যেসব ব্যক্তি বাংলাদেশের ব্যবসায়ী, এমপি, আমলা হোক দুবাই, মালয়েশিয়া, কানাডা, আমেরিকা, ইউরোপে ফ্ল্যাট কিনেছে, বাড়ি করেছে, মার্কেট করেছে, হোটেল করেছে—এগুলো তদন্ত করে ফিরিয়ে না আনতে পারলেও চিহ্নিত করেন যে, এই লোকগুলো টাকা পাচার করেছে। আপনার যারা সচিব, কর্মচারী আছে যারা কাজ করে আপনার মন্ত্রণালয়ে তাদের কাজে লাগান সৎ পথে।'

Comments

The Daily Star  | English
NBR to become separate specialised agency

NBR officials withdraw complete shutdown programme

However, the non-cooperation programme with the NBR chairman will continue

11m ago