বগুড়ায় ১১ ও ১২ বছরের দুই স্কুলশিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে বগুড়ায় নাশকতার চেষ্টা ও ভাঙচুরের অভিযোগে জেলার সারিয়াকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়েছে।

গত বুধবার সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একই আইনে, একই অভিযোগে ওই দুই শিশুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়।

অভিযুক্তদের মধ্যে সিয়াম বাবু (১২) সারিয়াকান্দির আন্দারবাড়ি গ্রামের মিঠু ইসলামের ছেলে। অন্য দুই অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে সাবিদুল ইসলাম সুপ্তা (১১) ও আব্দুল মোমিনও (২২) একই গ্রামের বাসিন্দা।

সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম জানান, উদ্ধারকারী নৌকার চালক সোনাতলা উপজেলা প্রশাসনের ওবায়দুর রহমান ও সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রশাসনের মোস্তাফিজার রহমান বাদী হয়ে সারিয়াকান্দি থানায় দুটি মামলা দায়ের করেন।

বগুড়ার আদালত পারিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেনের কাছ থেকে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আশেকুল খবির দুই শিশুসহ তিন আসামিকে বগুড়া জেল সুপারের মাধ্যমে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

যোগাযোগ করা হলে জেল সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, 'আমরা আদালতের নির্দেশনা পেয়েছি। কাল বা পরশুর মধ্যে তাদের যশোর পাঠানো হবে।'

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বুধবার বিকেল ৩টার দিকে সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনা নদীর কালিতলা ঘাটে রাখা দুটি উদ্ধারকারী নৌকা ভাঙচুর করে আব্দুল মোমিন, দুই শিশু ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজন আসামি। তারা নৌকায় অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। এ সময় আব্দুল মোমিনের পকেট থেকে দুটি গ্যাসলাইট ও একটি দিয়াশলাই জব্দ করা হয়।

এ ব্যাপারে মামলার বাদী মোস্তাফিজার রহমান বলেন, 'অভিযুক্তদের লোকজন হাতেনাতে ধরেছে। মোমিন নৌকা ভাঙচুর করছিল। তাকে সহায়তা করছিল দুই শিশু।' তবে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে ভাঙচুরের কোনো আলামত 'দেখেননি' বলে মন্তব্য করেন।

আরেক মামলার বাদী ওবায়দুর রহমানের ভাষ্য, 'উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশ ছিল যে মামলা করতে হবে। কী ধরনের মামলা হয়েছে তাও জানি না।'

সুপ্তার বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'সুপ্ত ও সিয়াম নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল। এক পর্যায়ে মোমিন (মাদকাসক্ত হিসেবে পরিচিত) ওদের তার কাছে আসতে বলে। মোমিনের কাছে গেলে স্থানীয়রা তাদের ধরে ফেলে।'

জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, 'আমি ইউএনওকে অনুরোধ করেছিলাম সুপ্ত-সিয়ামকে অভিযুক্ত না করার জন্য। কিন্তু তিনি আমার কথা শোনেননি।'

এ ব্যাপারে সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মূল আসামির সঙ্গে দুই শিক্ষার্থীকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে। ১০-১২ জন লোক তাদের ধরে আমার কাছে নিয়ে আসে। পরে তাদের থানায় পাঠিয়ে দেই। তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে পৃথক দুটি মামলা নেয় পুলিশ।'

এক্ষেত্রে অপ্রাপ্তবয়স্ক দুই শিক্ষার্থীর বিষয়ে ইউএনও বলেন, 'পরিস্থিতি তাদের অনুকূলে না থাকায় আমার কিছু করার ছিল না। ওই দুই শিক্ষার্থী আসামি আব্দুল মোমিনকে নৌকা ভাঙচুরে সহযোগিতা করছিল।'

বিষয়টি নিয়ে ওসি রবিউল বলেন, 'আমাদের কিছু করার ছিল না। মামলা দুটি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা। তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া না গেলে ওই দুই শিশুকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English
NBR speeds up auction process of abandoned goods

NBR moves to speed up auction of abandoned goods

About 2 lakh tonnes of imported goods left abandoned at Chattogram port alone for years

2h ago