অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে সারা দেশের চিকিৎসকরা

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।

আজ রোববার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন আবদুল আহাদ এই কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।

একইসঙ্গে তারা কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতেরও দাবি জানান।

ডা. আবদুল আহাদ বলেন, 'চিকিৎসক ও রোগীদের সুরক্ষা দিতে প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। আমরা কেউ এখানে সুরক্ষিত নই, এমনকি ঘটনার ১৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো মামলা রুজু হয়নি। প্রশাসনের ব্যর্থতা, চিকিৎসকের ওপর হামলা, রোগীর ওপর হামলার কারণে আমরা কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করছি।'

তিনি বলেন, 'এই কর্মসূচিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের পাশাপাশি সারা দেশের জেলা-উপজেলা সরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যসেবা-কেন্দ্রসহ বেসরকারি হাসপাতাল ও প্রাইভেট চেম্বারসহ সব কার্যক্রম শাটডাউন থাকবে।'

ডা. আবদুল আহাদ আরও বলেন, 'চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় অপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, সারা দেশের সব হাসপাতালে চিকিৎসকদের সুরক্ষায় ২৪ ঘণ্টা সশস্ত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগ দিতে হবে, সাত দিনের মধ্যে চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগ দিতে হবে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংস্কার করে বাস্তবায়ন করতে হবে।'

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জমান আজ দুপুর সোয়া ১টার দিকে বলেন, 'চিকিৎসকরা কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। ইন্টার্নসহ সব চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলাম। তবে আলোচনার পর তারা কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।'

সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর চিকিৎসায় অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল হট্টগোল হয়।

মৃত আহসানুল ইসলাম (২৫) বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী। তার মৃত্যুতে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে ঢামেকের এক চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা ঘটে। এতে গতকাল বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ঢামেকে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনায় চিকিৎসকেরা দোষীদের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেন। অন্যথায় ২৪ ঘণ্টা পর তারা কর্মবিরতিতে যাবেন বলেও ঘোষণা দেন। তবে তার আগেই আজ সকাল থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন তারা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকালে চিকিৎসকরা হাসপাতালে এসে কাজ শুরু করলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা হাসপাতাল ত্যাগ করেন। সাড়ে ৯টার দিকে জরুরি বিভাগের কর্মকর্তারা তাদের কক্ষ বন্ধ করে দেন এবং জরুরি টিকিট কাউন্টারটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

তবে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এতে সময় যত গড়াচ্ছে, ঢামেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভিড় কেবল বাড়ছে। অনেকে হতাশ হয়ে অন্য হাসপাতালে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

 

Comments

The Daily Star  | English
education in Bangladesh

As a nation, we are not focused on education

We have had so many reform commissions, but none on education, reflecting our own sense of priority.

15h ago