সম্প্রীতির দেশ গঠনে একে অপরের সহযোগিতায় এগিয়ে আসুন: সেনাপ্রধান

মেরুল বাড্ডায় জাতীয় বৌদ্ধ ধর্মীয় মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ছবি: আইএসপিআর

সম্প্রীতির দেশ গঠনে সবাইকে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে থেকে একে অপরের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কঠিন চীবর দান ও জাতীয় বৌদ্ধ ধর্মীয় মহাসম্মেলন উপলক্ষে আজ শুক্রবার ঢাকার মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শনের সময় তিনি এ কথা বলেন।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, শুভ কঠিন চীবর দান উপলক্ষে সেনাপ্রধান সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং পার্বত্য জেলাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান হতে আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, 'সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে প্রতিটি ধর্মের নিজ নিজ উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সেনাবাহিনী প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রম গ্রহণে সদা প্রস্তুত।'

একইসঙ্গে তিনি সম্প্রীতির দেশ গঠনের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে থেকে একে অপরকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। 

পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার জন্য অনুষ্ঠানে আগত ঢাকাস্থ বিদেশি মিশনের কূটনীতিকদের ধন্যবাদ জানান।

সেনাপ্রধান পার্বত্য জেলায় শান্তি ও সম্প্রীতির উন্নয়ন ঘটিয়ে সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে পার্বত্য এলাকায় বসবাসরত পাহাড়ি ও বাঙালিদের সচেষ্ট থাকতে অনুরোধ করেন। 

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত পার্বত্য জেলাগুলোতে পর্যটন শিল্পের বিকাশের পাশাপাশি স্থানীয় ভাষা, সংস্কৃতি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোকপাত করেন তিনি। 

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, পার্বত্য জেলাগুলোতে আরও স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হলে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা তাদের দক্ষতাকে দেশে ও বিদেশে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হবে।

সবশেষে সেনাপ্রধান সারা দেশব্যাপী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের আয়োজিত অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সেনাবাহিনীসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করায় বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। 

উল্লেখ্য, গত ১০ অক্টোবর সেনাসদরে সেনাপ্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের প্রতিনিধি দল। সেসময় সেনাবাহিনী প্রধান তিন পার্বত্য জেলায় শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবর দান উদযাপন উপলক্ষে আর্থিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা দেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। 

এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামে উৎসব পালন করার জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক কোটি টাকার চেক অনুদান হিসেবে দেন। 

বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, এ বছর পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ২৬৬টি বৌদ্ধ বিহারে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শুভ কঠিন চীবর দান পালিত হয়েছে।

পরিদর্শনের সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ ও জিওসি ৯ পদাতিক ডিভিশন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানের সভাপতি শাসনস্তম্ভ ভদন্ত ধর্মপ্রিয় মহাথের মহোদয়, প্রধান ধর্মদেশক ভদন্ত এস লোকজিৎ মহাথের মহোদয়সহ বিভিন্ন বিহার থেকে আগত পূজনীয় ভিক্ষুসংঘ, সরকারি ও বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সামাজিক ও সাংগঠনিক ব্যক্তিত্ব, ঢাকাস্থ বিদেশি মিশনের কূটনীতিক ও সর্বস্তরের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
education in Bangladesh

As a nation, we are not focused on education

We have had so many reform commissions, but none on education, reflecting our own sense of priority.

13h ago