শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা হচ্ছে না আপাতত

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়নে নেওয়া উদ্যোগ স্থগিত করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে এই কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়নে ২০২০ সালে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। তালিকা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য জাতীয় কমিটির একটি উপ-কমিটি ছিল।

কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গত চার বছরে মন্ত্রণালয় ৫৬০ জন বুদ্ধিজীবীর নাম তালিকাভুক্ত করে চারটি গেজেট প্রকাশ করে।

জাতীয় কমিটির সর্বশেষ সভা হয় ১৮ মার্চ এবং উপ-কমিটির সভা হয় ১ জুলাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উভয় কমিটির একজন সদস্য বলেন, 'ওই সভার পর থেকে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ থেকে কিছু শুনিনি। আমি মনে করি না এই উদ্যোগটি দিনের আলো দেখবে।'

মন্ত্রণালয় ও কমিটির সূত্রে জানা গেছে, শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা নিয়ে নতুন করে যেন বিতর্ক তৈরি না হয় তাই তালিকার কাজ স্থগিত করা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জাতীয় কমিটির প্রধান ইশরাত চৌধুরী বলেন, 'কোনো কমিটি না থাকায় তালিকা প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে। কমিটিগুলো সংস্কার করা হলে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করার বিষয়টি আবার বিবেচনা করা হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'এটি একটি নীতিগত বিষয়। এ ব্যাপারে আমি একা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। অন্তর্বর্তী সরকার বা পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার এটি পুনর্বিবেচনা করতে পারে।'

মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, শিল্পী, শিক্ষকসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন ও হত্যা করা হয়।

পরে তাদের লাশ রাজধানীর রায়েরবাজার, মিরপুরসহ কয়েকটি বধ্যভূমিতে ফেলে দেওয়া হয়।

পরাজয় আসন্ন বুঝতে করতে পেরে পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের আল-বদর, আল-শামস ও রাজাকারের মতো স্থানীয় দোসররা দেশের বুদ্ধিজীবী সমাজকে নিশ্চিহ্ন করে এবং উদীয়মান বাংলাদেশকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে পঙ্গু করার লক্ষ্যে ঠান্ডা মাথায় এই গণহত্যা চালায়।

কমিটির একজন সদস্য বলেন, 'শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ', ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকারের প্রকাশিত ডকুমেন্টরি 'বাংলাদেশ', 'বাংলাপিডিয়া' এবং ডাকটিকিট থেকে শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম পাওয়া যায়।

শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থে ৩২৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা রয়েছে। তবে তালিকাটি সম্পূর্ণ নয় বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে।

'বাংলাদেশ'প্রামাণ্যচিত্রে শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা বলা হয় ১ হাজার ১০৯ জন। আর বাংলাপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী ১ হাজার ১১১ জন বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়, যাদের মধ্যে ৯৯১ জন শিক্ষাবিদ, ৪৯ জন চিকিৎসক, ৪২ জন আইনজীবী, ১৩ জন সাংবাদিক, নয়জন সাহিত্যিক ও শিল্পী, পাঁচজন প্রকৌশলী এবং অন্য দুজন।

মুক্তিযুদ্ধ গবেষকদের অনেকে অবশ্য মনে করেন, মোট শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। ১৯৭২ সালে গঠিত 'বুদ্ধিজীবী নিধান তাথ্যানুসন্ধান কমিটির' সদস্যরা নিহত হওয়া ২০ হাজার বুদ্ধিজীবীর প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছিল।

(সংক্ষেপিত, বিস্তারিত পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে)

Comments

The Daily Star  | English
Prof Yunus in Time magazine's 100 list 2025

Time’s List: Yunus among 100 most influential people

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus has been named among TIME magazine’s 100 Most Influential People of 2025.

4h ago