খুলনায় ট্যাংকলরি শ্রমিকদের কর্মবিরতি দ্বিতীয় দিনে, ১৪ জেলায় তেল সরবরাহ আজও বন্ধ

এই কর্মবিরতির কারণে খুলনা ও ফরিদপুর অঞ্চলের ১৪টি জেলায় তেল সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। ছবি: স্টার

খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলী আজিমের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছেন ট্যাংকলরি শ্রমিকরা।

এতে খুলনার কাশিপুর এলাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন ও পরিবহন সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। ফলে খুলনা ও ফরিদপুর অঞ্চলের ১৪টি জেলায় তেল সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

গত রোববার দুপুর ১টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশ আলী আজিমকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে খালিশপুর থানার ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি অফিস ভাঙচুরের মামলা রয়েছে। এ ঘটনার পরই তার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামেন শ্রমিকরা। আজ সোমবার আলী আজিমকে আদালতে তোলা হয়।

এ প্রসঙ্গে খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এনাম মুন্সী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিএনপি অফিস ভাঙচুরের অভিযোগে আমাদের কার্যনির্বাহী কমিটির চারজন বর্তমান নেতা, দুইজন সাবেক নেতা এবং তিনজন সদস্যের বিরুদ্ধে ২১ আগস্ট মামলা হয়েছে। অথচ আলী আজিম ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন। আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, আলী আজিমের মুক্তি এবং নয় জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।'

এনাম মুন্সী আরও বলেন, 'গতকাল রাত ৮টার দিকে বিআইডিসি সড়কের কাশিপুর মোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শ্রমিকদের উপর হামলা করে। এ ঘটনারও সুষ্ঠু বিচার চাই আমরা।'

বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি, খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়ন এবং পদ্মা মেঘনা ও যমুনা ট্যাংকলরী শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এই কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে।

কর্মবিরতির ভেতর আজ নগরীর খালিশপুরের কাশীপুরে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের গেট ও এর আশেপাশে পঞ্চাশটির বেশি ট্যাংকলরি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

ছবি: স্টার

ফরিদপুরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের প্রগতি পেট্রোলিয়াম সার্ভিস থেকে গতরাতে তেল নিতে এসেছিলেন রুবেল সরদার। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাত থেকে ডিপোর সামনে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু তেল নিয়ে যাওয়ার কোন উপায় দেখছি না। তেল পেলেও শ্রমিক সংগঠনগুলোর কর্মীরা আমাকে এখান থেকে নিয়ে যেতে দেবে না। আমি চাই দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক। কারণ আমার ফিলিং স্টেশনে যে সামান্য তেল আছে তা আজকের ভেতর শেষ হয়ে যাবে।'

মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের দৌলতপুর ডিপোর ব্যবস্থাপক (অপারেশনস) মো. হাবিবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল রোববার দুপুর ২টা পর্যন্ত তেল উত্তোলন করা হয়েছে। তারপর থেকে সব বন্ধ আছে।'

হাবিবুর রহমান আরও বলেন, সাধারণত নভেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত জ্বালানি তেলের ব্যবহার বেশি হয়। কারণ এ সময় বোরো আবাদের জন্য প্রচুর তেল লাগে।'

মেঘনা পেট্রোলিয়ামের এই ডিপো থেকে প্রতিদিন গড়ে ১২ লাখ লিটার তেল সরবরাহ করা হয় বলে জানান হাবিবুর রহমান। এর ভেতর নয় লাখ লিটার ডিজেল, আড়াই লাখ লিটার পেট্রোল, ৭০ হাজার লিটার অকটেন, ছয় হাজার লিটার কেরোসিন ও নয় হাজার লিটার জুট বেশিন অয়েল।

অন্য দুটি ডিপো থেকেও প্রায় একই পরিমাণ জ্বালানি সরবরাহ করা হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

Comments

The Daily Star  | English

Disrupting office work: Govt employees can be punished within 8 days

The interim government has moved to amend the Government Service Act-2018 to allow swift disciplinary action against its employees who will be found guilty of disrupting official activities.

9h ago