জুলাই গণঅভ্যুত্থান: কৃতিত্ব নিয়ে ভার্চুয়াল লড়াই

ফাইল ছবি/ স্টার

শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দলে সদস্যসচিব নিয়ে বিরোধের মধ্যেই জুলাই অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব নিয়ে ভার্চুয়াল লড়াইয়ে জড়িয়েছেন অভ্যুত্থানে জড়িত আন্দোলনকারীরা।

ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক নেতারা ফেসবুকে দাবি করেছেন যে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার উৎখাতের আন্দোলনে 'প্রধান অংশীদার' ছিলেন তারা।

তবে বর্তমানে বিলুপ্ত গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতারা বলছেন শিবিরের নেতা-কর্মীরা অন্য সবার মতোই অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিলেন।

শিবিরের অনেক সাবেক ও বর্তমান নেতা ফেসবুকে লিখেছেন যে কীভাবে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের আশ্রয় দিয়েছেন, দেশি ও বিদেশি যোগাযোগ সমন্বয় করেছেন, বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছেন এবং কর্মীদের মাঠে সংগঠিত করেছেন।

এর জবাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আব্দুল কাদের লিখেছেন, সমন্বয়কেরাই ৯ দফা দাবি তৈরি করেছিলেন এবং শিবির কেবল তা প্রচার করেছে।

জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের অন্যতম সময়ন্বয়ক এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও আলোচনায় যোগ দেন।

'... জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস বিকৃত করবেন না। এই প্রজন্মের রক্তের অর্জন জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে মিথ্যাচার টলারেট করব না। সবকিছু নিয়ে চুপ থাকলেও এটা নিয়ে চুপ থাকা যায় না। ইতিহাস দখলের নোংরা খেলা বন্ধ করুন,' ফেসবুকে লিখেছেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের মধ্যে শিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, 'সত্য ইতিহাস জানা জরুরি। তবে যারা ক্রেডিট ভাগাভাগি নিয়ে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট করার চেষ্টা করছেন, তৃতীয় পক্ষকে সুযোগ করে দিচ্ছেন, ভবিষ্যত প্রজন্ম আপনাদের ক্ষমা করবে না।'

আন্দোলনের সময় শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী মো. আবু সাদিক কায়েম লিখেছেন, 'অধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজের দিকে ফোকাস না দিয়ে ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকার জন্য যে বাদানুবাদ হচ্ছে, তা শহীদদের সাথে তামাশা করার শামিল।'

২০২৩ সালের অক্টোবরে গঠিত ছাত্রশক্তি এবং প্রকাশ্যে সক্রিয় না থাকা শিবির এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেছে।

আন্দোলনে জড়িত বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় নাগরিক কমিটি নামে আরেকটি প্লাটফর্ম গঠন করা হয়।

নাগরিক কমিটির ১৮৮ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আছেন ছাত্রশক্তির নেতারা, শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অন্তত তিন জন সাবেক সভাপতি, কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, এবি পার্টি, ছাত্র ইউনিয়ন এবং ছাত্র ফেডারেশনের প্রতিনিধিরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠন এবং এর নাগরিক প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটি এই মাসের শেষের দিকে একটি নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে নতুন দলের আহ্বায়ক কমিটির শীর্ষ পদ নিয়ে নাগরিক প্লাটফর্ম অন্তত তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম নতুন দলের আহ্বায়ক হচ্ছেন এটি প্রায় নিশ্চিত হলেও সদস্যসচিব পদ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সূত্র জানিয়েছে, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম চান নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী নতুন দলের শীর্ষ নেতৃত্বে থাকুন।

অন্যদিকে নাগরিক কমিটিতে থাকা সাবেক শিবির কর্মীরা চান শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি এবং নাগরিক কমিটির নির্বাহী কমিটির সদস্য আলী আহসান জুনায়েদ নতুন দলের দ্বিতীয় শীর্ষ পদে আসুক।

সূত্র জানিয়েছে, নীতিনির্ধারকরা সাবেক শিবির নেতাদের জায়গা দিতে এবং সম্ভাব্য ভাঙন এড়াতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সিনিয়র সদস্যসচিব পদ তৈরির কথা ভাবছেন।

Comments

The Daily Star  | English
Global fashion brands are reaping triple-digit profits on Bangladeshi garments

Fast fashion, fat margins: How retailers cash in on low-cost RMG

Global fashion brands are reaping triple-digit profits on Bangladeshi garments, buying at $3 and selling for three to four times more. Yet, they continue to pressure factories to cut prices further.

12h ago