‘দাবি আদায় না হলে ঘরে ফিরবে না’ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে অবস্থানরত অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবার

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে অবস্থানরত গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা। ছবি: স্টার

আন্দোলনে আহতদের সবাইকে মাসিক ভাতার আওতায় আনাসহ তিন দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কার্যালয়ের সামনে অবস্থানরত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা বলছেন, 'দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না'।

আজ বুধবার সকাল ১১টার দিকে আন্দোলনে আহত অন্তত ৩০ জন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ১ নম্বর গেটের সামনে জড়ো হন।

তারা এখন পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করছেন এবং সারারাত অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছেন। তারা বলছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অবস্থান ছাড়বেন না।

বিক্ষোভকারীদের একজন কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা সৌরভ রাত ১১টার দিকে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে সারারাত অবস্থান করব। আমরণ কর্মসূচি পালন করব। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।'

সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন, তাদের 'এ', 'বি' ও 'সি'—এই তিনটি শ্রেণিতে (ক্যাটাগরি) ভাগ করে সরকারি সুবিধা দেওয়া হবে।

প্রথম ক্যাটাগরিতে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের এককালীন ৫ লাখ টাকা এবং প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার কথা বলা হয়। দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে এক অঙ্গহানি হয়েছে এমন অবস্থায় যারা আছেন, তাদের এককালীন ৩ লাখ টাকা এবং মাসে ১৫ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার কথা। আর সিদ্ধান্ত অনুসারে তৃতীয় ক্যাটাগরিতে সামান্য আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন, ভালো হয়ে গেছেন—তারা অগ্রাধিকারভিত্তিতে চাকরি ও পুনর্বাসনে অগ্রাধিকার পাবেন। কিন্তু ভাতা পাবেন না।

আজ সকালে আহতদের একটি অংশ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে আহতদের তিনটি শ্রেণি ভেঙে দুটি শ্রেণি করার দাবি তোলেন। তারা 'এ' ও 'বি' শ্রেণির আহতদের এককালীন অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধির পাশাপাশি সবাইকে ভাতার আওতায় আনার দাবি করেন।

মিরপুর থেকে আসা আহত বিক্ষোভকারী ইবুল রাসেল আজ সন্ধ্যা ৭টার দিকে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের নিয়ে বৈষম্য হচ্ছে। আমাদের "সি" ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। সকাল ১১টা থেকে এখানে অবস্থান করলেও, কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তিন ক্যাটাগরির পরিবর্তে আমরা শুধু দুটি ক্যাটাগরি।'

বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সেখানে পাঁচটি গাড়িতে করে সেনাসদস্যরা যান। তারা বিক্ষোভকারীদের ঘিরে রাখেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে আন্দোলনকারীরা গামছা, চাদর ও ওড়না পেতে মাগরিবের নামাজ পড়েন।

বিক্ষোভকারীদের একজন কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা সৌরভ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের তিনটি দাবি। তিনটির পরিবর্তে "এ" ও "বি" ক্যাটাগরি করা, আহত ও স্বজনদের নিরাপত্তায় সুরক্ষা আইন করা এবং আহতদের জন্য সার্বক্ষণিক হটলাইন চালু করা।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের অনেক ঘোরানো হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়, অনেক ঘোরানো হয়েছে। লিখিতভাবে আমাদের দাবিগুলো মেনে নিতে হবে। আমরা সম্মুখসারির যোদ্ধা। আমরা লিখিত প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত সড়ক ছেড়ে যাব না।'

Comments

The Daily Star  | English
Domestic violence killing women in Bangladesh

Domestic violence in Bangladesh: When numbers speak of the silence

When we are informed that 133 women have been killed by their husbands in seven months, it is no longer just a number.

7h ago