চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাকে শোকজ

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদ হাসান খন্দকারের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। টেলিফোনে চাঁদা দাবি করে কথোপকথনের একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
বিষয়টি জানাজানি হলে রংপুর মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।
দুই মিনিট ৪১ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, নাহিদ অজ্ঞাত এক ব্যক্তির সঙ্গে চাঁদা নিয়ে কথা বলছেন। কথোপকথনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নামও উল্লেখ করেন নাহিদ হাসান।
নাহিদকে বলতে শোনা যায়, 'আপনি দেখতেই পাচ্ছেন, বিষয়টি কতদূর গড়িয়েছে। যদি মনে করেন, সহযোগিতা করতে পারেন, তাহলে করুন। সংগঠন চালাতে কিছু আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। আমি চাই না, আপনি কোনো সমস্যায় পড়ুন। যদি সমস্যা মনে করেন, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলুন।'
উত্তরে শোনা যায়, 'আপনি যদি বলেন, বালুর ব্যবসা বন্ধ করে দেবো। আমি এক লাখ টাকা দিতে পারব না, তবে পাঁচ হাজার টাকা দিতে পারি।'
জবাবে নাহিদ বলেন, 'আপনি ব্যবসা বন্ধ করবেন কেন? চালিয়ে যান। দরকার হলে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলুন। সংগঠন চালাতে যা প্রয়োজন, তা আপনার জানা আছে।'
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কথোপকথনটি এক সপ্তাহ আগের। রংপুরের হাজিরহাট এলাকায় ইকো পার্ক প্রকল্পের আড়ালে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার পরিপ্রেক্ষিতে চাঁদা দাবি করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
তবে নাহিদ হাসান খন্দকার চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাকে হেয় করতে এটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। আমি ৬-৭ দিন আগে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। আমি কারও কাছ থেকে কোনো টাকা দাবি করিনি। বরং, তারা একাধিকবার টাকা দিতে চাইলেও আমি নিইনি।'
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, 'যুবলীগের একটি অংশ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে এবং সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই বিতর্ক তৈরি করা হয়েছে।'
এ ঘটনায় গতকাল শনিবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগরের সমন্বয়ক আলী মিলনের সই করা একটি নোটিশে নাহিদকে তিন দিনের মধ্যে এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
জানতে চাইলে সংগঠনের রংপুর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা ভিডিওটি খতিয়ে দেখছি। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এটি আমাদের সংগঠনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পরিকল্পিতভাবে প্রচার করা হয়েছে। তবে যদি নাহিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে যথাযথ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
জানতে চাইলে রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সাইম ডেইলি স্টারকে জানান, পুলিশ ঘটনাটি সম্পর্কে জেনেছে। তবে এখনো চাঁদা দাবির বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।
Comments