এনআইডি সংশোধনে আবেদনের নিষ্পত্তিতে সময় লাগবে আরও ৬ মাস

এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে আবেদনের নিষ্পত্তি তিন মাসে শেষ করার কথা থাকলেও তা শেষ করতে আরও ছয় মাস লাগবে বলে আজ রোববার জানিয়েছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর।

তিনি বলেন, 'ভোটার নিবন্ধনের তালিকা হালনাগাদের কার্যক্রম চলার কারণে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তারা তা নিয়ে ব্যস্ত আছেন। যে চার লাখ আবেদন পেন্ডিং আছে, সেগুলো আগামী ৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ক্লিয়ার করতে হবে।'

আজ রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এনআইডি ডিজি এসব কথা বলেন।

এএসএম হুমায়ুন কবীর বলেন, 'আমরা তিন লাখ ৭৮ হাজারের একটা আবেদন তিন মাসের ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে শেষ করার একটি বিষয় আপনাদের বলেছিলাম। তারপর আমাদের একটা প্রক্রিয়া শেষ করে যখন আমরা কাজ শুরু করতে যাই, তখন ২৯ ডিসেম্বর হয়ে যায়। ইতোমধ্যে আড়াই মাস পার হয়ে গেছে।'

এর আগে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের এনআইডি ডিজি বলেছিলেন, 'আগামী তিন মাসের মধ্যে ঝুলে থাকা পৌনে চার লাখ এনআইডি সংশোধন আবেদন নিষ্পত্তি করা হবে।'

এনআইডি ডিজি এএসএম হুমায়ুন কবীর বলেন, গত ১৬ মার্চ পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, সেদিন পর্যন্ত আমরা দুই লাখ ৭৮ হাজার আবেদন শেষ করতে পেরেছিলাম আগের আবেদনসহ। ইতোমধ্যে আমাদের কাছে আরও তিন লাখ দুই হাজার আবেদন জমা পড়ে।

'মাঠে এখন ভোটার নিবন্ধনের কাজ চলছে। অফিসাররা এ কাজে বেশ ব্যস্ত। ২২ মার্চ পর্যন্ত ৪৭ লাখ ৫৪ হাজার ভোটারের নিবন্ধন হয়েছে। ভোটার নিবন্ধনের কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে কর্মকর্তারা এনআইডি আবেদনের কাজে মন দিতে পারেননি।'

তিনি বলেন, 'অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই চার লাখ আবেদনের সংশোধনে আমরা আগে শেষ করি। ভোটার নিবন্ধনের কাজ শেষ হবে ৫ মে। ৫ মে পর্যন্ত ব্যস্ত অফিসাররা। এই ব্যস্ততার কারণে এনআইডি সংশোধনে মনোযোগ দিতে পারিনি। এই জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, আগে ভোটার নিবন্ধনের কাজ শেষ হোক। যখন ভোটার নিবন্ধনের কাজটা কমে আসবে, তখন আমরা পুরো মনোযোগ সেখানে দিতে পারব।'

তিনি আরও বলেন, 'এরইমধ্যে আমরা দুই লাখ ৭৮ হাজার আবেদনের কাজ শেষ করায় আমাদের আত্মবিশ্বাস জন্মেছিল যে জুনের মধ্যে কাজটা শেষ করতে পারব। এর মধ্যে যেসব আবেদন জমা পড়বে, তার কিছু হয়তো থেকে যাবে। কারণ, আমরা জনবল বাড়াতে পারব না।'

এএসএম হুমায়ুন কবীর জানান, যে গতিতে আবেদন নিষ্পত্তি হচ্ছে, আমার কেন জানি মনে হচ্ছে, এই গতিতে কাজ হলে আমরা জনভোগান্তি কমাতে পারব। ক্রাশ প্রোগ্রাম জানুয়ারি থেকে মার্চে শেষ। এক লাখ আবেদন সংশোধন করতে পারি। আমরা অনুমান করছি, কাছাকাছি সংখ্যার আবেদন আমরা শেষ করতে পারব। হয়তো পুরোটা পারব না ভোটার রেজিস্ট্রেশনের কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে।

এনআইডি সংশোধনের জন্য কাঠামোবদ্ধ কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিবেদন তৈরিতে আমরা ছক তৈরি করেছি। তিনটি ছক—যারা বিদেশে থেকে ভোটার হচ্ছেন, চাকরিজীবীদের জন্য একটি ছক এবং তৃতীয় হচ্ছে জেনারেল ছক। এই কাজ চলছে। প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় যেন নিয়মিত এনআইডি আবেদন সংশোধনের প্রক্রিয়া মনিটর করা যায়, সেই সিস্টেম ডেভেলপ করা হচ্ছে।

এনআইডি সংশোধনের কাজে আর্থিক লেনদেনে অভিযোগ এসেছে কি না, জানতে চাইলে এনআইডি ডিজি বলেন, 'কিছু কিছু জায়গায় এই চক্র কাজ করছে। কেউ কেউ টাকা-পয়সা নিয়েছে এমন অভিযোগও আমি পেয়েছি। এ ক্ষেত্রে আমরা ডিবিকে কাজে লাগিয়েছি এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। ঠাকুরগাঁওয়ে আমাদের একজন ডেটা এন্ট্রি অপারেটরকে ধরা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নরসিংদীতে দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।'

Comments

The Daily Star  | English
problems in filing complaints in police stations

No scope to verify authenticity when cases are filed: IGP

Instructions have already been issued to ensure that no one is arrested in a harassing manner, he says

2h ago