স্বর্ণা দাসের পরিবারে চৈত্রের হাহাকার, বিজিবির মানবিক সহায়তা

দেশজুড়ে সামাজিক-সাংস্কৃতিক নানা আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে বাংলা বর্ষবরণ। তবে মৌলভীবাজারে স্কুলশিক্ষার্থী স্বর্ণা দাসের পরিবারে কেবলই চৈত্রের হাহাকার।
সন্তান হারানোর শোকে বৈশাখী রঙ যেন মলিন হয়ে গেছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের পরেন্দ্র দাসের মেয়ে স্বর্ণা দাসের (১৬) মৃত্যু হয়।
ভারতের ত্রিপুরায় তার বড় ছেলে থাকেন। তাকে দেখতে স্বর্ণা ও তার মা ১ সেপ্টেম্বর রাতে স্থানীয় দুই দালালের সহযোগিতায় লালারচক সীমান্ত দিয়ে চোরাইপথে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করেন। রাত ৯টার দিকে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার কাছে পৌঁছালে বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালালে স্বর্ণা ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এবং ভাগ্যক্রমে তার মা বেঁচে যান, জানিয়েছিলেন পরেন্দ্র দাস।
বিএসএফ ৪৫ ঘণ্টা পর স্বর্ণার মরদেহ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করে।
শোকাহত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। নববর্ষের দিনে বিয়ানীবাজার (৫২ বিজিবি) ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে স্বর্ণার পরিবারকে উন্নত জাতের ফ্রিজিয়ান গাভী উপহার দেওয়া হয়।
গরুটি এতদিন বিজিবির নিজস্ব খামারে লালন-পালন করা হয়েছে।
গাভী উপহার দেওয়ার পাশাপাশি নববর্ষের উৎসবে স্বর্ণার পরিবারকে সঙ্গ দেন বিজিবির সদস্যরা। সেই সঙ্গে ইয়ুথ জার্নালিস্ট কমিউনিটির প্রতিনিধি দলও নগদ অর্থ সহায়তা দিয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়ায়।
পরেন্দ্র দাস বলেন, 'আমরা মেয়েকে হারিয়ে ভীষণ শোকাহত। বিজিবি শুরু থেকেই আমাদের পাশে ছিল। আজকে উন্নত জাতের গাভী উপহার দেওয়ায় বিজিবির মহাপরিচালক ও পুরো ব্যাটালিয়নকে ধন্যবাদ জানাই।'
৫২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মেহেদী হাসান বলেন, 'স্বর্ণা দাসের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা শুরু থেকেই এই পরিবারের পাশে ছিলাম, সব সময়ই থাকব। তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য বলে মনে করি।'
এ সময় বিজিবির মিডিয়া কনসালট্যান্ট সাঈফ ইবনে রফিক, সিনিয়র সাংবাদিক সালেহ বিপ্লব, মোহসীন উল হাকিম, ইয়ুথ জার্নালিস্ট কমিউনিটির সভাপতি আহসান কামরুল, সাধারণ সম্পাদক সজিব খান, দপ্তর সম্পাদক ওমর ফারুকসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
Comments