‘গণপিটুনি’ বেড়ে যাওয়া নিয়ে শঙ্কিত ৭১ শতাংশ তরুণ: জরিপ

দেশের ৭১ শতাংশেরও বেশি তরুণ মনে করেন, মব জাস্টিস বা গণপিটুনির ঘটনা দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের প্রতিফলন হিসেবে একে দেখা হচ্ছে।
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের যৌথভাবে পরিচালিত এক জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। গত ২০ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সারা দেশে ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী দুই হাজার তরুণের ওপর এই জরিপ চালানো হয়।
আজ সোমবার ঢাকার ব্র্যাক সেন্টার ইনে 'ক্রান্তিকালে তারুণ্য: জুলাই আন্দোলনের পরবর্তী সময়ে চাকরি, শিক্ষা এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এই জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হানের নেতৃত্বাধীন এই গবেষণাদলে আরও ছিলেন একরামুল হাসান, শাফা তাসনিম, ইশরাত শারমিন, নীলাদ্রি নাভিয়া নোভেলি এবং মো. রাজীব।
জরিপে অংশ নেওয়া ৭১.৫ শতাংশ তরুণ মনে করেন, গণপিটুনির ঘটনা একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা। ১৫.১ শতাংশ এ বিষয়ে কোনো মতামত দেননি এবং ১৩.৪ শতাংশ দ্বিমত পোষণ করেছেন।
শাফা তাসনিম বলেন, ৮০.২ শতাংশ তরুণ অগ্নিসংযোগ, ডাকাতি এবং চুরির মতো ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
৩৪.৫ শতাংশ মনে করেন, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার ঘটনা দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলছে। তবে ৩৯.৯ শতাংশ এর সঙ্গে একমত নন।
জরিপে অংশ নেওয়া ৪৪.২ শতাংশের মতে, নারীবাদী বা উদারপন্থী মতামতের বিরুদ্ধে আক্রমণ একটি ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয়। অন্যদিকে, ৫৩.৬ শতাংশ মনে করেন, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা তাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে।
৪৬.৭ শতাংশ তরুণ রাজনৈতিক সংঘর্ষ এবং ক্যাম্পাসের সহিংসতা নিয়ে শঙ্কিত। ৫৬.২ শতাংশ মনে করেন, অন্যায্য বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গ্রেপ্তার ও মামলা দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করছে।
৩৭.৪ শতাংশ তরুণ সরকারি পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তন বা বিলম্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
আলোচনা সভায় সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, এই গবেষণার ফলাফল শুধুমাত্র জরিপে অংশগ্রহণকারী নির্দিষ্ট সংখ্যক তরুণদের মতামত প্রতিফলিত করে। এটিকে সমগ্র জনগোষ্ঠী বা অন্য কোনো বয়সের মানুষের মতামত হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়, বিশেষ করে রাজনীতির মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলোতে।
Comments