হাড়িধোয়া নদী বাঁচাতে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ

নরসিংদীর হাড়িধোয়া নদীকে দূষণমুক্ত ও পুনর্জীবিত করতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
আজ শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন পাউবোর নরসিংদী কার্যালয়ের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. হুমায়ূন কবির।
তিনি বলেন, 'অতিরিক্ত দূষণে জর্জরিত হাড়িধোয়া নদী। নদীটির পুনরায় প্রাণ ফিরিয়ে আনতে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমাদেরকে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে, এখনও অর্থ ছাড়ের সরকারি আদেশ (জিও) পাইনি। এটি পেলেই সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু করা হবে।'
স্থানীয়দের অভিযোগ, একসময় স্বচ্ছ জল ও মাছের প্রাচুর্যে ভরা এ নদী এখন শিল্পবর্জ্য, আবাসিক এলাকার নোংরা পানি ও পলিথিন-আবর্জনায় মৃতপ্রায়।
নরসিংদীর একটি কলেজের প্রভাষক সোহাগ আহমেদ বলে, নদীর দুই তীরে থাকা ডাইং, টেক্সটাইল, ট্যানারি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত কারখানাগুলো প্রতিদিন কোনো প্রকার পরিশোধন ছাড়াই রাসায়নিক বর্জ্য ফেলছে। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে বাজার ও বাসাবাড়ির ময়লা পানি। ফলে নদীর পানি কালচে হয়ে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
শিবপুর কারারচরের বাসিন্দা সোহরাব হোসাইন বলেন, 'দূষণের কারণে এখন আর কেউ এই পানি ব্যবহার করতে সাহস পায় না। মাছের প্রজাতি দ্রুত বিলুপ্ত হচ্ছে, জেলেরা জীবিকা হারিয়ে পেশা পরিবর্তন করছেন।'
নদী সংরক্ষণ আইনে শিল্পবর্জ্য পরিশোধন ছাড়া নদীতে ফেললে জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান থাকলেও কার্যকর প্রয়োগের অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তারা অবিলম্বে শিল্পবর্জ্য শোধনাগার চালু, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও নদীর তীরে সবুজ বেষ্টনী তৈরির দাবি জানিয়েছেন।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মনসুর আহমেদ বলেন, 'হাড়িধোয়া নদীর স্বাভাবিক গতিপথ ফিরিয়ে আনতে বার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ চলছে। তবে প্রভাবশালী মহল ও কিছু ব্যবসায়ীর কারণে কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। তবু আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে এগোচ্ছি, আশা করি হাড়িধোয়া আবারও প্রাণ ফিরে পাবে।'
Comments