ছাত্রলীগ নেতার ছাত্রদল সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পায়নি কমিটি, তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন

রাজশাহী জেলার কয়েকজন ‘বিতর্কিত’ ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অন্তত চারটি অভিযোগ তদন্ত করে একটি ছাড়া বাকি সব কয়টির বিষয়ে সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছে ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটি।
রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানা ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমি। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী জেলার 'বিতর্কিত' ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অন্তত চারটি অভিযোগ তদন্ত করে একটি ছাড়া বাকি সব কয়টির বিষয়ে সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করেছে ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটি।

কমিটির সদস্য শেখ শামীম তুর্য দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শিবির বা ছাত্রদলের সঙ্গে তাদের যোগাযোগের কোনো ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি।'

তিনি বলেন, অন্যান্য অভিযোগ যেগুলো ছিল আমরা তার সবগুলোর বিরুদ্ধেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেছি। কমিটির প্রতিবেদন তৈরির আগে আমরা কমিটির সদস্যরা এসব তথ্যের সত্যতা নিয়ে বসব।'

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানা ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন অমির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্তে গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহী সফর করে ছাত্রলীগের ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি।

তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো হচ্ছে- দলের নারী কর্মীকে উত্ত্যক্ত, মাদকাসক্তি, চাঁদাবাজি এবং ইসলামী ছাত্র শিবির ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা।

রাজশাহী শহর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রকি কুমার ঘোষ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান রাজিবসহ ছাত্রলীগ নেতাদের একাংশ তাদের বিরুদ্ধে শিবির ও ছাত্রদলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনেন।

এক বিবৃতিতে ইসলামী ছাত্র শিবির তাদের দাবি অস্বীকার করলেও ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানা ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ছাত্রদলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছেন ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মর্তুজা ফাহমিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক খোন্দকার মাকসুদুর রহমান সৌরভ।

সৌরভ বলেন, 'আমরা তাকে ছাত্রলীগের নেতা হতে দেখে অবাক হয়েছি। আমি রানাকে ছাত্রদলের অনেক সভা ও মিছিলে অংশ নিতে দেখেছি।'

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটির সঙ্গে অভিযোগকারী ছাত্রলীগ নেতা কিংবা ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে কমিটির সদস্য তুর্য বলেন, 'তাদের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি।'

ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কয়েকটি সূত্র জানায়, রাজশাহীতে অবস্থানকালে তদন্ত দলের সদস্যরা অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের কাছ থেকে 'রাজকীয় অ্যাপ্যায়ন' পেয়েছেন।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ছাত্রলীগে কয়েকজন নেতা বলেন, 'তদন্ত কমিটির সদস্যরা রাজশাহীর পর্যটন মোটেলে উঠেছেন। সেখানে তাদের থাকা-খাওয়া ও ফ্লাইট ভাড়ার সমস্ত বিল পরিশোধ করেছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা।'

জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির সদস্য শেখ শামীম তুর্য অভিযোগ অস্বীকার করে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি নিজেই সব বিল পরিশোধ করেছি। এই সংক্রান্ত সমস্ত নথি আমার কাছে আছে। ছাত্রলীগ সভাপতি-সেক্রেটারি নয়, রাজশাহী জেলার অন্যান্য নেতারা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা আমাদের আপ্যায়ন করেছেন।'

Comments