‘আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও আওয়ামী লীগের জন্য কঠিন হবে’

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গতকাল শুক্রবার দলের নেতাদেরকে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রচারণা শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি তাদের মনে রাখতে বলেন, এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে এবং এটি আওয়ামী লীগের জন্য কঠিন হবে।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির গতকালের বৈঠকে বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তিনি এখন দলের জন্য আরও বেশি সময় দেবেন এবং জনসভায় যোগ দিতে বিভিন্ন জেলায় সফর শুরু করবেন। আগামী ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পোলো গ্রাউন্ডে তার প্রথম সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল গণভবনে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল ৪টায় শুরু হয়ে রাত ১০টা ১৫ মিনিটে বৈঠক শেষ হয়।

আগামী ২৪ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২২তম ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। এ দিন সকালে কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, বিকেলে কাউন্সিল অধিবেশন এবং সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। এ লক্ষ্যে ২২টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গতকালের বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনে কোনো অর্থের বিনিময় হওয়া উচিত না।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা টাকার পেছনে ছুটবে না এবং ২০০৭ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন, তাদেরকে দলীয় পদ দেওয়া উচিত।

ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের কমিটিতে পদের বিনিময়ে টাকা নেওয়া বন্ধ করতে বলার ২ দিন পর শেখ হাসিনার কাছ থেকেও একই মন্তব্য পাওয়া গেল।

শেখ হাসিনা গতকাল বৈঠকে বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না বললেও শেষ পর্যন্ত অংশ নিতে পারে। তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের বিষয়টি মাথায় রাখতে বলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কেন্দ্রীয় নেতা শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, 'যে নেতারা বারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তারাই মনোনয়ন পাবেন, সেটা ধরে নেওয়া ঠিক না। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি জরিপ করা হয়েছে এবং উপযুক্ত প্রার্থী খুঁজে বের করতে আরও জরিপ করা হবে।'

আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ২০ ও ২১ ডিসেম্বর। সেই কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে সভাপতি এবং ওবায়দুল কাদেরকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনর্নির্বাচিত করে দলটি।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী কমিটির এর আগের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় গত ৭ মে। তখন সিদ্ধান্ত হয়, আওয়ামী লীগ ১৪ দলীয় জোটের আদর্শিক অংশীদারদের সঙ্গে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। ওই বৈঠকে আওয়ামী লীগ নেতারা ৩০০ আসনেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের দাবি জানান।

গতকালের বৈঠকে আওয়ামী লীগ নেতা মির্জা আজম আওয়ামী লীগের জোট ও সমমনা সংগঠনগুলোকে নিয়ে বৈঠকের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা জানতে চান। জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ও ওবায়দুল কাদের শিগগির এই বৈঠকের তারিখ ঠিক করবেন।

ইউএনবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, 'আমরা যেহেতু গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাই বিএনপি সভা-সমাবেশ, মিছিল এবং অন্যান্য কর্মসূচির আয়োজন করতে পারে। তবে যারা হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত, তাদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে। কারণ, তারা মানুষকে হত্যা ও জীবন্ত পুড়িয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।'

শেখ হাসিনা আরও বলেন, দলটির প্রতি আস্থা থাকায় জনগণ বারবার আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে।

কিন্তু যারা সন্ত্রাস, হত্যা, অগ্নিসংযোগ, সম্পদ লুণ্ঠন, বোমা-গ্রেনেড হামলা এবং অর্থ পাচারে জড়িত, সেই বিএনপিকে জনগণ ভোট দেবে না।

তিনি বলেন, 'বিএনপির যারা অগ্নিসংযোগ ও জঙ্গিবাদসহ হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসে জড়িত, তাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। তাদের রেহাই দেওয়া হবে না।'

Comments

The Daily Star  | English

PSC announces major changes to ease BCS recruitment process

The PSC chairman says they want to complete the entire process — from prelims to recruitment — in 12 months

6m ago