‘অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলায় এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে’

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলায় এখন থেকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলায় এখন থেকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ মঙ্গলবার সকালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ ২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, দুর্ঘটনা ও দুর্যোগ হ্রাস করি, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন একটি ধারাবাহিক ও চলমান প্রক্রিয়া। রূপকল্প ২০২১ লক্ষ্য স্থির করে আমরা ২০০৮ এর নির্বাচনে ইশতেহার দিয়েছিলাম এবং বাংলাদেশের জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমরা এখন পর্যন্ত সরকারে আছি একটানা। যার ফলে বাংলাদেশের উন্নয়নগুলো তরান্বিত-দৃশ্যমান হচ্ছে এবং মানুষ তার সুফল ভোগ করছেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যখন আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করি তখনই আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাই। এই মর্যাদা নিয়েই আমরা ২০৪১ সালের বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। এটাই আমাদের প্রত্যয় এবং লক্ষ্য। এর ধারাবাহিকতায় যে কোনো ঝুঁকি হ্রাস করা, মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া, সেই সঙ্গে উন্নয়ন কাজগুলো দ্রুত তরান্বিত ও মানসম্মত করা আমাদের সবার প্রচেষ্টা।

আমরা চাই আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাক। দেশ যতটা এগিয়ে যাবে, এ দেশের মানুষ তত ভালো থাকবে। আমরা ইতোমধ্যে প্রত্যেকটা ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষকে বিনা পয়সা ঘর করে দিচ্ছি। তাদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করেছি। একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না। বিদ্যুৎ প্রায় গ্রামে পৌঁছে দিয়েছি। আমাদের দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, আমাদের উন্নয়নের গতি কিছুটা হলেও স্লথ হয়ে গেছে। কারণ একদিকে করোনাভাইরাসের অভিঘাত, অপরদিকে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞা। যার ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। মন্দা মোকাবিলার জন্য এখন থেকে আমাদেরও প্রস্তুতি নিতে হবে। এ জন্য আমি আহ্বান জানিয়েছি, যার যেখানে কর্মস্থান; সারা বাংলাদেশে এত আমরা ফায়ার স্টেশন করে দিয়েছি, প্রত্যেকেই যার যার যেখানে জমি আছে, যা পারেন তরকরি-ফলমূল প্রতিটি জায়গায় কিছু না কিছু উৎপাদন করবেন। নিজেরাই নিজেদের চাহিদা পূরণের চেষ্টা করবেন। বিশ্বের এই মন্দার ধাক্কা যেন আমাদের দেশে না পড়ে।

তার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি। ইনশাল্লাহ বাংলাদেশের এই অপ্রতিরোধ্য গতিতে অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না। আমরা এগিয়ে যাব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তার বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে, উন্নত জীবন পাবে, শিক্ষায়-দীক্ষায় উন্নত হবে। সেই লক্ষ্যই আমরা বাস্তবায়ন করবো, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

ফায়ার সার্ভিসের উন্নয়নে আওয়ামী লীগে সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সেবার মানোন্নয়নের পাশাপাশি আমরা এ সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুবিধার দিকেও বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি। কারণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের জীবনটা যাতে ভালোভাবে চলে সেটাও দেখা আমাদের দায়িত্ব। সে কারণে পূর্ণাঙ্গ রেশনের ব্যবস্থা করা এবং ঝুঁকি ভাতা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টে আমরা ২০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছি। আমি মনে করি, যেহেতু সংখ্যা বেড়ে গেছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টে আরও ২০ কোটি টাকা আমি অনুদান দেবো।

শেখ হাসিনা বলেন, গত ১০ বছরে এই প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা ১ লাখ ৯২ হাজার ৮৭টি অগ্নিদুর্ঘটনায় অংশ নিয়ে ১৬ হাজার ৩০৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার সম্পদ রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে। এ সময় এ প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ১ লাখ ২৯ হাজার ৭৯৯টি অ্যাম্বুলেন্স কলের মাধ্যমে ১ লাখ ২৬ হাজার ৮৩৯ জন রোগী হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ফায়ার সার্ভিসের প্রতিটি কর্মী মানুষের কাছে দুঃসময়ের বন্ধু হিসেবে প্রতীয়মান।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago