রাজনীতি

ছাত্রলীগ কর্মীর মামলায় বিএনপির ৩৮ নেতাকর্মী আসামি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ছাত্রলীগ কর্মীর মামলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৩৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ছাত্রলীগ কর্মীর মামলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৩৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মারধর, মোটরসাইকেলে আগুন এবং ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে গতকাল সোমবার রূপগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন ছাত্রলীগ কর্মী আশাদুল প্রধান।

এর আগের রাতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা হামলা চালায় বলে তিনি অভিযোগ করেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ('গ' সার্কেল) আবির হোসেন বলেন, বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা ওই মামলায় ৩৮ জন এজাহারনামীয় এবং ৭০-৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব গোলাম ফারুক খোকন, রূপগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাহফুজুর রহমান হুমায়ূন, মুড়াপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মজিদ ভূঁইয়া, রূপগঞ্জ থানা যুবদলের সভাপতি আমিনুল ইসলাম প্রিন্স, কাঞ্চন পৌর যুবদলের সদস্যসচিব মো. কোহিনুর, মুড়াপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের সদস্যসচিব ওবায়দুল ইসলাম রকি, ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মাসুদুর রহমান, থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান মাহমুদসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে এবং ৭০-৮০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

মামলায় বাদী উল্লেখ করেছেন, গত রোববার রাত ৮টার দিকে রূপসীর নিজ বাসা থেকে কাঞ্চনে বোনের বাসার দিকে মোটর সাইকেলে যাচ্ছিলেন। সাড়ে আটটার দিকে গোলাকান্দাই-কাঞ্চন রোডের সিএনজি স্ট্যান্ড সংলগ্ন জিনিয়া স্টোরের পূর্ব পাশে মহাসড়কের উপরে গোলাম ফারুক খোকনের নেতৃত্বে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৭০-৮০ জন নেতাকর্মী মিছিল করছিল। তাদের সবার হাতে লাঠিসোটা, রড, এসএস পাইপ ছিল। ওই সড়ক পার হওয়ার সময় তাকে দেখামাত্রই আসামিরা তার উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওই ছাত্রলীগ কর্মীর।

তিনি মামলার এজাহারে আরও বলেন, তাকে মোটর সাইকেল থেকে নামিয়ে আসামিরা কিল, ঘুষিসহ এসএস পাইপ দিয়ে আঘাত করতে থাকে। বাদীর মোটর সাইকেলটিতেও আগুন ধরিয়ে দেয় আসামিরা। যাওয়ার সময় তিনটি ককটেলও বিস্ফোরণ ঘটান তারা।

এদিকে রোববার রাতে বিএনপি বা তাদের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কোনো মিছিল বা সমাবেশ ছিল না দাবি করে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন বলেন, 'গত নির্বাচনের আগে সারাদেশে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সেসব মামলায় নেতা-কর্মীরা কেউ আগাম জামিনে আবার কেউ গ্রেপ্তার হওয়ার পর জামিনে বের হয়েছেন। এই কারণে আগামী ১০ ডিসেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য সমাবেশে নেতা-কর্মীরা যাতে যেতে না পারে সেইজন্য তাদের ঠেকাতে আবারো নতুন করে গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে। সারাদেশেই আবার গায়েবি মামলা দিতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগ।'

এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের অভিযোগে বিএনপির ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন শ্রমিক লীগের মেঘনা শিল্পাঞ্চল শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হালিম।

গত ১৮ নভেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২৪ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেন মো. সোহেল নামে আরেক ছাত্রলীগ কর্মী। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা ওই মামলায় ২৪ জনের নাম উল্লেখসহ ২৫-৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

এরপর ২১ নভেম্বর দিবাগত রাতে নাশকতার অভিযোগে বিএনপির ৩৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০-২৫০ জনকে আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা করে পুলিশ। বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে থানার উপপরিদর্শক শাহাদাত হোসেন মামলাটি করেন।

গত ২৭ নভেম্বর সকালে নাশকতার অভিযোগে একই আইনে আড়াইহাজার থানার উপপরিদর্শক মামুন মিয়া বাদী হয়ে বিএনপির ৪৩ জনের নাম উল্লেখসহ ৫০-১০০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। একই সকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় আরেকটি মামলা করে পুলিশ। নাশকতার অভিযোগে ওই মামলাতেও বিএনপির ২১ জনকে আসামি করেন থানার উপপরিদর্শক সানোয়ার হোসেন।

Comments

The Daily Star  | English

Trial of murder case drags on

Even 11 years after the Rana Plaza collapse in Savar, the trial of two cases filed over the incident did not reach any verdict, causing frustration among the victims.

9h ago