রাজনীতি
মুন্সিগঞ্জ

৪ থানায় বিএনপির দেড় শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নাশকতা মামলা, গ্রেপ্তার ৭

মুন্সিগঞ্জে নাশকতার অভিযোগে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলায় ৭ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ,
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

মুন্সিগঞ্জে নাশকতার অভিযোগে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলায় ৭ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার রাতে ৪ উপজেলায় ককটেল বিস্ফোরণ, গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ৪ থানায় বিএনপির ১৫৬ নেতকর্মীর নামে পৃথক মামলা করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১৮৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জ কোর্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জামাল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপির ৭ নেতাকর্মীকে মুন্সিগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ১ জনকে জামিন দিয়ে বাকিদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

টংগিবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিব খান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'টংগিবাড়ী উপজেলার দেউলভোগ এলাকায় বুধবার রাতে বিএনপির ঝটিকা মিছিল ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে কাঠাদিয়া শিমুলিয়া ইউনিয়নের শাহ আলম নামে একজন পথচারী বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত আরও ৪০ জনকে আসামি করা রয়েছে।'

এ ঘটনায় রাতে অভিযান চালিয়ে টংগিবাড়ীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আব্দুল আলিম, মো. রাজন সুন্সী ও লতিফ দপ্তরিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, লৌহজংয়ের বেজগাঁও কবরস্থান মাঠে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদলের একটি দল মিছিলে সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে বেশ কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা এগিয়ে এলে মিছিলকারীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে। এতে যুবলীগের ৫ কর্মী আহত হয়। এ ঘটনায় বুধবার রাতে ফিরোজ আহমেদ নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী বাদী হয়ে ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫০ জনের নামে লৌহজং থানার মামলা করেন।

এ মামলায় রাতে বিভিন্ন এলাকার অভিযান চালিয়ে ফারুক আহমেদ অপু ও মো. ইলিয়াস নামের বিএনপি ২ কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

আরেক মামলা সম্পর্কে সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মিজানুল হক বলেন, 'উপজেলার নিমতলীতে রাত সাড়ে ৭টার দিকে একটি দল মিছিল করে সড়কে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় ও একটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে। ঘটনার পর ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। এই ঘটনায় সিরাজদিখান থানার এস আই বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে ৪২ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৪০ জনকে অজ্ঞাত করে মামলা করেন। এরপর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ফারুক মেম্বার ও মো. ওয়াজি নামে ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'

এছাড়া বুধবার রাত ৮টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলে ককটেল বিস্ফোরণ ও হামলার অভিযোগে গজারিয়ায় থানায় সুমন নামে একজন বাদী হয়ে ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরও ৬০ জনের নামে মামলা করেছেন।

বিএনপির হামলায় ৩ ছাত্রলীগ কর্মী নিহতের অভিযোগ করেন তিনি।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আতোয়ার হোসেন বাবুল বলেন, 'এসব বিএনপির নেতাকর্মীদের পক্ষে সম্ভব নয়। বিএনপির নেতাকর্মীরা এমনিতেই ভয়ভীতি অবস্থায় থাকে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করার জন্য এটা একটা কৌশল। ভাঙচুর, ককটেল এইসব কোনো অবস্থায়াই বিএনপির পক্ষে সম্ভব না। বিএনপি মুন্সিগঞ্জে এইগুলা গত ১৪ বছরে করে নাই এখনও করবে না।'

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো. মহিউদ্দিন বলেন, '১০ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে বিএনপির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে মামলা দেওয়া হচ্ছে। শুনেছি অন্যান্য জেলাতেও একই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। বিএনপি এসব মিছিল বা বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত নয়। আমাদের নেতাকর্মীদের এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।'

Comments